ঢাকা, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৫, ২৮ চৈত্র, ১৪৩১, ১২ শাওয়াল, ১৪৪৬
সর্বশেষ
স্মরণ সভা সফলে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ:চসাস
হাটহাজারী উপজেলায় ১৩ টি কেন্দ্রে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা-২০২৫ অনুষ্ঠিত
এসএসসি পরীক্ষার্থীদের মাঝে মিরসরাই ছাত্রদলের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
বাংলাদেশেকে ঘিরে ভারত, আমেরিকা, চীনের ত্রিমুখী দ্বন্দ্বের অর্ন্তনিহিত কারণ ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ
চট্টগ্রাম ফাউন্ডেশনের গঠনতন্ত্র,কার্যবিধি প্রণয়ন সংক্রান্ত সভা
কিশোর গ্যাং- সমাজের অবক্ষয় ও করণীয়
বিশ্ব সন্ত্রাসী ইসরাইল’র নৃশংসতা গণহত্যা :দেশবিশ্বে তীব্র নিন্দা বিক্ষোভ প্রতিবাদ
সন্দ্বীপের সীমানা নির্ধারণের দাবিতে মানববন্ধন:সন্দ্বীপ অধিকার আন্দোলন
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘অদম্য একুশ ‘র আনুষ্ঠানিক যাত্রা ও ঈদ পুনর্মিলনী

আশ্রিতা

কাদের সাহেব বাবার অনুরোধ রাখতে , আবার বিয়ে করলেন।মেয়ে টিউলিপের বয়স মাত্র তিন মাস, চাকরি আর মেয়ে দুটো কে বাঁচাতে সমান তালে যুদ্ধ করতে গিয়ে হাঁফিয়ে উঠেছেন, চেয়েছিলেন টিউলিপকে ওর ছোট খালামনি বন্যা কাছে দিয়ে আসতে , সবে মাত্র ওর ও একটি সন্তান হয়েছে, দুই জন মায়ের স্নেহে  একসাথে মানুষ হতে পারবে।

বন্যা অনেক আশা করে কয়েকবার এসেছিলেন,  টিউলিপ কে নিতে । বাবার ইচ্ছের বিরুদ্ধে কিছু করতে পারেনি কাদের সাহেব।  টিউলিপ হচ্ছে বংশের একমাত্র নাতনি , কারো হাতে দিবেন না।

বৃদ্ধ বাবার কথা রাখতে অল্প বয়সী, সুন্দরী নাহারকে বিয়ে করলেন কাদের , নাহার বিয়ের প্রথম রাতে বলেন আমার দুটো শর্ত আছে, চতুর মহিলা প্রথমে কাদেরের থেকে কোন শর্ত আছে কি না শুনতে চাইলেন। কাদের সাহেব দুটো শর্ত দিলেন, যে কোন কিছুর বিনিময়ে টিউলিপ কে মায়ের স্নেহে বড়ো করতে হবে, আর নিজের কোন সন্তান নিতে পারবেন না।

নাহারের চোখ জলে ভিজিয়ে এল, গরীব ঘরের মেয়ে বলে, অর্ধেক বয়সের বুড়োকে বিয়ে করতে হলো, আবার শর্ত পূরণ সাপেক্ষে। নিজের স্বপ্ন গুলোকে  মূহুর্তের মধ্যে গলা টিপে ধরলো, ইচ্ছে ছিল লেখা পড়া শেষ করে , একটা চাকরি করে মা বাবাকে দেখতে পারবে।

কাদের সাহেবের শর্ত মেনে নিয়ে , নাহার নিজের ইচ্ছের কথা আর কখনো মুখ থেকে বাহির করেন নি।
টিউলিপ অনেক বড়ো হয়েছে, তার পরম বন্ধু এখন মা ,নাহারের মুখ থেকে কোন সময় বের হয়নি টিউলিপ নামটা, টিউলিপ মা ডাকার আগে , নাহার টিউলিপ কে মা ডেকে ফেলেন।

হঠাৎ করে কাদের সাহেব অসুস্থ হয়ে পড়লেন, ক্লিনিকে ভর্তি করানো হলো, টেষ্টে এল করোনা , নাহার ছাড়া আর কোন নিকটবর্তী আত্মীয় স্বজনকে পেলেন না,সবাই মৃত্যু ভয়ে পালিয়ে গেছেন, শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে, আইসিইউতে দেবার পর কাদের সাহেব বুঝতে পারলেন , যে মানুষটিকে অবহেলা করেছেন, স্ত্রীর অধিকার দেয়নি,
আজকে সে মানুষটি সেবা করে যাচ্ছে, আর মেয়েটা যে বাপের জন্য কতোখানি সিরিয়াস হতে পারে,নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যাবেনা।

মেয়ে টা বুঝতে শিখে গেছে, মা’র সাথে বাবার সম্পর্ক স্বামি স্ত্রীর মতো না, শুধু লোক দেখানো সম্পর্ক।
কিছুটা সুস্থ হয়ে কাদের সাহেব বাসায় ফিরে এসেছেন, মেয়ে না দেখা অবস্থায় নাহারকে জড়িয়ে ধরলেন , অনেক দেরি হয়ে গেছে বুঝতে নাহারকে।

নাহার ও এই অনুভূতি কে প্রশ্রয় দিলেন না, সার্থের জন্য এইভাবে কাকুতি মিনতি করছেন।

নাহার ওষুধ লাগবে বলে মেয়ের কাছে বলে বাহির হলেন, মেয়েকে বলল, মা পাঁচ মিনিট পর তোমার বাবার একটা ওষুধ আছে , প্রেসক্রিপশন দেখে দিয়ে দিও। নাহারের কন্ঠস্বর কেমন যেন ভারি হয়ে ওঠে, টিউলিপের মনে কেমন সন্ধেহ হলো, টিউলিপ একবার জিজ্ঞেস করল, মা তোমার কি খারাপ লাগছে।

না বলে বাহির হলেন  , টিউলিপ বাবাকে ওষুধ খাওয়াতে গিয়ে , ওষুধের ফাইলে মায়ের লেখি একটি চিরকুট পান।
মা ,
আমি তোমাকে পেটে ধারণ করেনি, কিন্তু তোমাকে পেয়ে আমি ধন্য , তোমার আচরণে সব কিছু ভুলে গেছি, তোমাকে মা ডেকে নিজের গর্ভধারিনী মাকেও ভুলতে চেয়েছি, সেটা অবশ্য পেরেছি ও, কারণ আমার নিজের মা’র থেকে আমি কোন দিন কিছু পায়নি, তোমার থেকে যে টুকু পেয়েছি, তুমি বড়ো হয়েছো , তোমাকে বিয়ে দিতে হবে, তোমার শশুর বাড়ী থেকে অনেক লোক আসবে, যদি আমার কথা তোমাদের কেউ জিজ্ঞেস করে, তুমি প্রথমে বলে ফেলবে এটা আমার মা, সে বিশ্বাস নিয়ে আমি তোমাকে বড় করেছি।

কিন্তু আমি তো বলতে পারবো না, কারণ তোমার বাবার সাথে আমার সে সম্পর্ক নেই।
তোমার বাবার প্রথম শর্ত ছিল আমি তোমাকে মায়ের স্নেহে বড় করতে হবে, আমি আশা করি পূরণ করতে পেরেছি। দ্বিতীয় শর্ত তোমার আদরে কাউকে ভাগ বসাতে দিয় নি, সেটা ও পূর্ণ করেছি। আমার কোন শর্ত পূরণ করতে হয়নি তোমার বাবার, সেটা আমার তরফ থেকে দিয়নি, আজকে আমার মনে হচ্ছে,  কিছু কিছু সম্পর্ক থেকে ইতি টানতে হয়, আমি ও আশ্রিতা থেকে , ইতি টেনে মুক্তি নিলাম।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

ফেসবুক পেজ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০  
error: protected !!

Copyright© 2025 All reserved