জামালপুরের ইসলামপুরে প্রশংসাপত্র উত্তোলন করতে লাগবে ২ হাজার টাকা। এমন অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে, বেলগাছা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় অ্যান্ড বি.এম কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে। জামালপুরের ইসলামপুরে মাধ্যমিক, স্কুল এন্ড কলেজ, বি.এম কলেজ, দাখিল, কামিল মাদরাসা সহ ১০৫ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৩ হাজার ৮শ ৬২ জন ২০২৪ সালে এসএসসি ও সমমনা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। ২০২৪ সালে বেলগাছা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় অ্যান্ড বি.এম কলেজে থেকে মানবিক, বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে ৯৫জন ও ভোকেশনাল শাখার ৬২ জনসহ মোট ১৫৭ জন পরীক্ষার্থ উত্তীর্ণ হয়। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ওই বিদ্যালয় থেকে পাশ করার পর দেশের বিভিন্ন কলেজের ভর্তি হওয়ার জন্য প্রশংসা পত্র ও মার্কসীট উত্তোলন করার জন্য গেলে প্রতি শিক্ষার্থীর নিকট ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা আদায় করে প্রশংসা পত্র ও মার্কসীট বিতরণ করেন। কোন শিক্ষার্থী টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে প্রশংসা পত্র ও মার্কসীট না দিয়ে উল্টো ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। তারা বলেন, টাকা ছাড়া কোন ছাত্র/ছাত্রীদেরকে প্রশংসাপত্র ও মার্কসীট প্রদান করা হবে না।
জানা গেছে, জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার বেলগাছা উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড বি.এম কলেজটি যমুনা নদী ভাঙন কবলিত এলাকার গরীব নিরীহ কৃষক পরিবারের সন্তানদের শিক্ষিত করার জন্য ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় বেলগাছা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় অ্যান্ড বি.এম কলেজ। কিন্তু যে উদ্দেশ্যে কলেজটি স্থাপন হয় তার উল্টো কিছু লক্ষ্য করা যায়।
গত ২৭ জুলাই ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের মানবিক শাখার ছাত্রী মোছাঃ সাদিয়া আক্তার ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে জিপিএ ৩.৮৩ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। পরবর্তীতে সে অন্য কলেজে এইচ, এসসি-তে ভর্তি হওয়ার জন্য প্রশংসাপত্র ও মার্কসীট উত্তোলন করার জন্য কলেজে গিয়ে তার প্রশংসাপত্র ও মার্কসীট চাইলে কলেজ কর্তৃপক্ষ ২ হাজার টাকা দাবী করেন। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে সাদিয়াকে কোন কাগজ পত্র দেয়া হবেনা মর্মে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। নিরুপায় হয়ে সাদিয়া তার অভিভাবককে জানাইলে অভিভাবক কলেজে এসে অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, প্রশংসাপত্র ও মার্কসীট নিতে হইলে অন্য ছাত্র ছাত্রীদের নিকট থেকে যা নিয়েছি আপনাকেও তাই দিতে হবে। পরে সাদিয়ার অভিভাবক ২ হাজার টাকা দিয়ে প্রশংসাপত্র নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে ২ হাজার টাকার রশিদ চাইলে অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা দিতে অস্বীকার করেন এবং বলেন মার্কসীট নেয়ার সময় রশিদ দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা গাইবান্ধা ইউনিয়নের পোড়ারচর আব্দুস ছাত্তার উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান, এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করার সময় সকল প্রকার প্রাপ্য অর্থ আদায় করে ফরম পূরণ করা হয়। যা পরে নেয়ার আর কোন সুযোগ নেই। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, টাকা নেয়া অযৌক্তিক। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, অভিযোগকারীর লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।