ঢাকা, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৫, ২৮ চৈত্র, ১৪৩১, ১২ শাওয়াল, ১৪৪৬
সর্বশেষ
স্মরণ সভা সফলে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ:চসাস
হাটহাজারী উপজেলায় ১৩ টি কেন্দ্রে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা-২০২৫ অনুষ্ঠিত
এসএসসি পরীক্ষার্থীদের মাঝে মিরসরাই ছাত্রদলের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
বাংলাদেশেকে ঘিরে ভারত, আমেরিকা, চীনের ত্রিমুখী দ্বন্দ্বের অর্ন্তনিহিত কারণ ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ
চট্টগ্রাম ফাউন্ডেশনের গঠনতন্ত্র,কার্যবিধি প্রণয়ন সংক্রান্ত সভা
কিশোর গ্যাং- সমাজের অবক্ষয় ও করণীয়
বিশ্ব সন্ত্রাসী ইসরাইল’র নৃশংসতা গণহত্যা :দেশবিশ্বে তীব্র নিন্দা বিক্ষোভ প্রতিবাদ
সন্দ্বীপের সীমানা নির্ধারণের দাবিতে মানববন্ধন:সন্দ্বীপ অধিকার আন্দোলন
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘অদম্য একুশ ‘র আনুষ্ঠানিক যাত্রা ও ঈদ পুনর্মিলনী

জাতির পিতাকে সন্মান করা সাংবিধানিক দায়

ড.মনওয়ার সাগর:

যে জাতি তার দেশের স্থপতি, যোগ্য নেতা ও যোদ্ধাদের সম্মান দেয় নি, সে জাতি দুর্ভাগা জাতি। যে ইতিহাস প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চর্চিত হয়েছে, সে ইতিহাস কখনো বিস্মৃত হওয়া যায়না।

আমাদের ঐতিহাসিক বীর-বীরাঙ্গনা, দেশের প্রতি যাঁদের অনেক অবদান রয়েছে, তাঁদের সেই অবদানকে স্মরণ করা আমাদের সকলের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ। যাঁরা বাংলাদেশের জন্য তাঁদের সবকিছু উৎসর্গ করেছিলেন, সেই সব মানুষগুলিকে ইতিহাসের পাতায় স্থান দেওয়া নৈতিকতার দায়।

পৃথিবীর সব দেশে জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা,স্থপতি,জাতির পিতাকে সন্মানের আসনে রাখা হয়েছে।রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকতে পারে কিন্তু তারা কখনো তাদের স্থপতিকে অসন্মান করেনি।

আমেরিকা তার দেশের প্রতিষ্ঠাতা পিতা জর্জ ওয়াশিংটনকে আজও ভুলেনি।এছাড়াও তারা আজও মূল প্রতিষ্ঠাতা জন অ্যাডামস , বেঞ্জামিন ফ্র্যাঙ্কলিন , আলেকজান্ডার হ্যামিল্টন , জন জে , টমাস জেফারসন , জেমস ম্যাডিসন এবং কে শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করেন।

ভারত তার প্রতিষ্ঠাতা নেতা – মহাত্মা গান্ধী কে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে।একইভাবে চীন- সান ইয়াত সেনকে
পাকিস্তান- মুহাম্মদ আলি জিন্নাহকে ভিয়েতনাম -হো চি মিনকে,মিশর -সাদ যাঘলুল আফগানিস্তান-আহমাদ শাহ্‌ আব্দালিকে মালয়শিয়া- টেংকু আব্দুল রাহমানকে,
জার্মানি-অটো ফন বিসমার্ককে, ভেনেজুয়েলা-সিমন বলিভার কে, ব্রাজিল -আন্দ্রাদা সিলভাকে,
ফ্রান্স -নেপোলিয়নকে তুরস্ক-মুস্তফা কামাল পাশাকে
নেপাল-নারায়ণ শাহ্‌ কে ভুলেনি। দল মত নির্বিশেষে শ্রদ্ধার আসনে রেখেছে।

সোভিয়েত ইউনিয়ন এর প্রতিষ্ঠাতা হলেন ভ্লাদিমির ইলিচ উলিয়ানভ। লেনিন নামেই যিনি বেশি পরিচিত।
ভ্লাদিমির লেলিনের জন্ম ১৮৭০ সালে ভলগা নদীর তীরের রাশিয়ার ছোট শহর সিমবির্স্কে।

পরবর্তীতে লেনিনের সম্মানে এই শহরটির নাম আনুষ্ঠানিকভাবে বদলে উলিয়ানভস্ক রাখা হয়। লেলিনের বংশীয় উপাধি উলিয়ানভ থেকে এই নামকরণ করা হয়।
আমরাতো গোপালগঞ্জ এর নাম বঙ্গবন্ধু রাখিনি।শুধু সংবিধানে জাতির পিতা হিসেবে সন্মানিত করা হয়েছে।
সংবিধানের ১ক,২ ক, ৩ক, ৪ ক অনুচ্ছেদে জাতির পিতাকে স্থান দেয়া হয়েছে।৪ক অনুচ্ছেদে বলা আছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পীকার ও প্রধান বিচারপতির কার্যালয় এবং সকল সরকারী ও আধা-সরকারী অফিস, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, সংবিধিবদ্ধ সরকারী কর্তৃপক্ষের প্রধান ও শাখা কার্যালয়, সরকারী ও বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস ও মিশনসমূহে সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করিতে হইবে।
যারা সংবিধানের অনুচ্ছেদকে অস্বীকার করবে অর্থাৎ
অসাংবিধানিকভাবে সংবিধানের প্রতি মানুষের অনাস্থা সৃষ্টি রাষ্ট্রদ্রোহমূলক অপরাধ।

৭ক অনুচ্ছেদে সুষ্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি শক্তি প্রদর্শন বা শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বা অন্য কোন অসাংবিধানিক পন্থায়-…(খ) এই সংবিধান বা ইহার কোন বিধানের প্রতি নাগরিকের আস্থা, বিশ্বাস বা প্রত্যয় পরাহত করিলে কিংবা উহা করিবার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ বা ষড়যন্ত্র করিলে-তাহার এই কার্য রাষ্ট্রদ্রোহিতা হইবে এবং ঐ ব্যক্তি রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে দোষী হইবে।

তাহলে প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক – এই অপরাধের কি শাস্তি হবে?

যার দূরদর্শিতা, সংগ্রাম ও আত্মত্যাগ একটি জাতিকে স্বাধীনতার জন্য অনুপ্রাণিত করেছিল,যিনি ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি সেই নেতার প্রতি যে অসন্মান আমরা করেছি তার বিশ্ববাসির কাছে আমাদের মানসিক দীনতাকেই প্রমাণ করলো।

বঙ্গবন্ধুকে সবকিছুর উর্ধ্বে রাখা উচিত ছিল।আমি কখনো বেগম খালেদা জিয়াকেও দেখিনি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অসন্মানজনক কথা বলতে।শুধু তাই নয়,বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ীটিও জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। যা পাক হানাদার বাহিনীও করেনি। এই দৃশ্য আমার মত অরাজনৈতিক প্রচুর মানুষের হৃদয়কে গভীরভাবে মর্মাহত করেছে।

একজন সাহিত্য কর্মী হিসেবে, একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে এই অন্যায় আমি মেনে নিতে পারছিনা।কোথায় গেলো আমাদের তথাকথিত বুদ্ধিজিবীরা যারা এতোদিন বঙ্গবন্ধুর নাম জপে সুবিধা নিয়েছিল? আমাদের দেশের শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজিবী, শিল্পী সাহিত্যিক,সাংবাদিক, সচেতন নাগরিক এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করা উচিত।যারা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আগুন দিয়েছে, ভাষ্কর্য ভেঙ্গেছে,গণভবন ও সংসদ ভবনে ঢুকে লুটপাট করেছে, ধ্বংযজ্ঞ চালিয়েছে,রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করেছে,নাশকতা করেছে,বাড়ী ঘরে ও মন্দিরে আগুন জ্বালিয়েছে তাদের প্রতি তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি।

‘অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে, তব ঘৃণা যেন তারে তৃণ সম দহে’ অন্যায়কারী ও অন্যায় সহ্যকারী উভয়ই সমানভাবে নিন্দনীয় ।সুস্থ, বিবেকবান মানুষের উচিত বলিষ্ঠভাবে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা।আমরা প্রতিবাদ করিনা বলেই অন্যায়কারীদের অন্যায় সম্পর্কে অনুশোচনা বা ভীতি জাগে না; বরং শক্তির দম্ভে দাপট দেখাতে থাকে তারা।

আমি ঠিক জানিনা – গুটি কয়েক সমন্বয়ক আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আবেগকে কোন পথে পরিচালিত করছে? কোন ধ্বংস যজ্ঞের দিকে নিয়ে যাচ্ছে? আমরা কোনো বিদেশী শক্তির ক্রীড়নক হতে যাচ্ছিনাতো? প্রতিটি দেশপ্রেমিক নাগরিককে সচেতন দৃষ্টি রাখতে হবে,যাতে আমাদের সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত না আসে।আমরা কখনো বিদেশী শক্তির কাছে মাথা নত করতে পারিনা।

আমরা চাই- একটা শক্তিশালী গণতান্ত্রিক সরকার আসুক।যে সরকার সংবিধানকে সমুন্নত রেখে আমাদের মৌলিক অধিকার ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আনতে পারবে।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

ফেসবুক পেজ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০  
error: protected !!

Copyright© 2025 All reserved