‘আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। সব তথ্য ডিজি অফিসে। আপনারা ঢাকা যান। আমি এখন খেতে যাবো। আমার এতো সময় নেই।’
উত্তেজিত হয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেছেন জামালপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক উত্তম কুমার দেব। পরে তিনি সংবাদিকদের রুমের ভেতর রেখে বের হয়ে যান এবং দরজা লাগিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন।
এমনটাই জানিয়েছেন যমুনা টেলিভিশনের সাংবাদিক প্রেসক্লাব জামালপুরের কোষাধ্যক্ষ সাগর ফরাজী। তিনি জানান, মাত্র দুটো প্রশ্ন তাঁকে করেছিলাম। মাসে গড়ে কতজন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন? এবং কোন ধরনের পাসপোর্ট বেশি হয়?
ঘটনা বুধবার (১৪ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে জামালপুর শহরতলীর বিজয় চত্ত্বরে অবস্থিত আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলায়।
এ সময় আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ের ওই সহকারী পরিচালক সময় টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার প্রেসক্লাব জামালপুরের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার জামালপুর প্রতিনিধি প্রেসক্লাব জামালপুরের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক ময়না আকন্দ, ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের জামালপুর প্রতিনিধি সাইমুম সাব্বির শোভন ও ক্যামেরা পার্সন শাওন মোল্লার সাথেও অসদাচরণ করেন।
এর আগের দিন ওই অফিসে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে হুঁশিয়ারি দিয়ে এসেছে জামালপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা। পরেরদিনই তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে অসদাচরণ করলেন।
প্রেসক্লাব জামালপুরের সাধারণ সম্পাদক ও সময় টিভির সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম জানান, ‘দুপুর ২টার দিকে আমরা ক’জন সাংবাদিক কিছু তথ্যের জন্য পাসপোর্ট কার্যালয়ে যাই। সেখানে সহকারী পরিচালকের কক্ষে প্রবেশ করার আগেই তাকে (উত্তম কুমার দেবকে) দেখা যায়। তিনি দরজায় দাঁড়িয়ে কয়েকজন সেবাগ্রহীতার সাথে গোপন আলাপ করছিলেন। আমরা পরিচয় দিতেই তিনি উত্তেজিত হয়ে যান। তিনি আমাদেরকে তার কক্ষে প্রবেশ করতে দিচ্ছিলেন না। পরে আমরা কিছু তথ্য চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে কক্ষে প্রবেশ করেন। আমরা সবাই তার রুমে গিয়ে বসি।’
এ ঘটনায় সহকারী পরিচালক উত্তম কুমার দেবের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন জামালপুরের সাংবাদিক নেতারা।
অসদাচরণের বিষয়ে জামালপুর অনলাইন জার্নালিস্ট নেটওয়ার্কের সভাপতি জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, ‘জামালপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয় নিয়ে হাজারো অভিযোগ রয়েছে। তাদের প্রতিটি শিরায় শিরায় অনিয়ম-দুর্নীতি। এবার আমরা এর শেষ দেখবো। প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি একটাই। পরিবর্তনের এই যুগে এমন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা আমরা জামালপুরের মাটিতে দেখতে চাই না। তার বিচার না হলে আমরা কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবো।’
তবে এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি জামালপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক উত্তম কুমার দেব।
ঘটনা জানানো হলে জেলা প্রশাসক মো. শফিউর রহমান জানিয়েছেন, ‘একজন সাংবাদিক তথ্যের জন্য সরকারি কার্যালয়ে যেতেই পারেন। সহকারী পরিচালকের এমন ব্যবহার করা ঠিক হয়নি। আমি এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।