চট্টগ্রাম উপকূলীয় বন বিভাগ-মৎস্য বন্দর কর্মকর্তাদের অর্থ আত্মসাৎ প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেল
মোঃ শহিদুল ইসলাম
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন হলে মেসার্স বিসমিল্লাহ স্টিলের পক্ষ থেকে ২২ ই আগস্ট বৃহস্পতিবার বিকাল ০৩ টায় উপকূলীয় বন বিভাগ চট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রাম মৎস্য বন্দরের কর্মকর্তাদের প্রতারণা, হয়রানি ও টাকা আত্মসাৎ এর প্রতিবাদে ও ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দাবি প্রসঙ্গে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। মেসার্স বিসমিল্লাহ স্টিলের পক্ষ থেকে মাহবুল আলম, ফয়সাল, ইসমাইল ও মোবারকের উপস্থিতে অমিত আইচ এ সংবাদ সম্মেলনে বিষয়বস্তু তুলে ধরে তিনি বলেন, বিগত ১৬/০৫/২০২৩ ইং তারিখে সরকারি প্রতিষ্ঠান উপকূলীয় বন বিভাগ চট্টগ্রাম কর্তৃক একটি অকেজো ঘোষিত জাহাজ এম ভি বনানী বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে জাতীয় পত্রিকা দৈনিক ইনকিলাব এবং চট্টগ্রামের স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক পূর্বকোণ এর বিজ্ঞাপন প্রধানের মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করেন। উল্লেখ্য জাহাজটি চট্টগ্রাম মৎস্য বন্দরে রাখা ছিল। বিজ্ঞপ্তিটি আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করিলে আমি সর্বপ্রথম মৎস্য বন্দরের অনুমতি নিয়ে জাহাজটির পরিদর্শন করি, এবং ৩০/০৫/২০২৩ ইং তারিখে আমি জাহাজটি ক্রয়ের উদ্দেশ্যে দরপত্র দাখিল করি। সেদিন উপকূলীয় বন বিভাগ চট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রাম মৎস্য বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে দরপত্র উন্মোচন করা হয়, এবং মেসার্স বিসমিল্লাহ স্টিলকে ( সর্বমোট ৪২,৩২,৮১২) টাকা সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯/০৭/২০২৩ ইং তারিখে উপকূলীয় বন বিভাগ জাহাজটি অপসারণের কার্যাদেশ প্রদান করেন, এবং টেন্ডারের শর্ত মোতাবেক ৩০ দিনের মধ্যে চট্টগ্রাম মৎস্য বন্দর থেকে জাহাজটি অপসারণ করার অনুমতি প্রদান করেন, চট্টগ্রাম মৎস্য বন্দরের জেনারেল ম্যানেজারকে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ আবদুর রহমান অনুরোধ করেন, যাহার স্মারক নং ১৭২৬। নির্দিষ্ট সময়ে জাহাজটি অপসারণের জন্য আমি ২৪/০৭/২০২৩ ইং তারিখে ২০ জন শ্রমিক নিয়ে জাহাজটি অপসারণের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম মৎস্য বন্দরে জাহাজটি কর্তন করা শুরু করি। ২৬/০৭/ ২০২৩ ইং তারিখে কর্তনকৃত কিছু মালামাল ট্রাকে করে স্থানান্তর করার সময় চট্টগ্রাম মৎস্য বন্দর কর্তৃপক্ষ হঠাৎ বাধা প্রদান করে, এখানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মৎস্য বন্দরের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান। তার কাছে বাধা প্রদানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,চট্টগ্রাম মৎস্য বন্দর কর্তৃপক্ষ উপকূলীয় বন বিভাগ চট্টগ্রামের কাছে জাহাজটির পার্কিং ভাড়া বাবদ ৬৬,০২,৩০৬ টাকা অপরিশোধিত রহিয়াছে, তা পরিশোধের আগে এখান থেকে কোন মালামাল স্থানান্তর করা যাবে না। তখন আমি মেহেদী হাসান এর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাই, চট্টগ্রাম মৎস্য বন্দর কর্তৃপক্ষ উপকূলীয় বন বিভাগ চট্টগ্রাম থেকে তাদের পাওনা আদায় না করে জাহাজটির দরপত্র উন্মোচন কেন করা হলো, এবং আপনি তো দরপত্র আহবান থেকে শুরু করে সব সময় উপকূলীয় বন বিভাগ চট্টগ্রামের কর্মকর্তাদের সাথেই ছিলেন, তখন আপনি কেন উপকূলীয় বন বিভাগ চট্টগ্রামকে দরপত্র আহবানে বাধা প্রদান করেননি, আমি তার কাছে আরো জানতে চাই কোন অমিমাংশিত পণ্যর দরপত্র আহ্বান করা যায় না, তাকি আপনি জানতেন না, জবাবে মেহেদী হাসান ক্ষিপ্ত হয়ে আমার সাথে দুর্ব্যবহার করেন, এবং যাদের কাছ থেকে জাহাজ ক্রয় করেছি তাদের কাছ থেকে এ টাকা এনে মৎস্য বন্দরকে দেওয়ার কথা বলেন। আমি বলি এই কাজ তো আমার নয়, আমি সরকারী সকল শর্ত পূরণ করে দরপত্র প্রদান করেছি, কেন আমাকে আর্থিক ক্ষতির মধ্যে ফেলছেন।
মেহেদী হাসান বলেন, যদি আপনাকে এখন জাহাজের মালামাল হস্তানান্তর করতে দিই তাহলে আমরা কোন অর্থই উপকূলীয় বনবিভাগ চট্টগ্রাম হতে উদ্ধার করতে পারবো না। আমি পুরো বিষয়টি সাথে সাথে মৌখিকভাবে উপকূলীয় বন বিভাগ চট্টগ্রামের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ আবদুর রহমানকে জানাই এবং ৩০/০৭/২০২৩ ইং তারিখে লিখিতভাবে জানাই। বিভাগীয় বন কর্মকর্তা চট্টগ্রাম মৎস্য বন্দরের জেনারেল ম্যানেজারকে মালামাল পরিবহনের বাধা দূর করার জন্য সার্বিক সহযোগিতা চেয়ে স্মারক প্রদান করেন যাহার স্মারক নং ১৮৪৫। কিন্তু চট্টগ্রাম মৎস্য বন্দর অপরিশোধিত অর্থ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত মালামাল স্থানান্তর করিতে দিবেনা জানিয়ে দেয়। এরপর উপকূলীয় বন বিভাগ চট্টগ্রাম এর নিকট বিগত ১৭/০৮/২০২৩ ইং,২৭/০৮/২০২৩ ইং এবং ১৯/০৯/২০২৩ ইং তারিখে বার বার বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য লিখিত অভিযোগ করে এসেছি। আমি আর্থিক ভাবে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি এবং বিষয়টি পুনরায় ২৪/০৩/২০২৪ ইং তারিখে উপকূলীয় বন বিভাগ চট্টগ্রামকে ক্ষতিপূরণ সহ অর্থ ফেরত প্রদান প্রসঙ্গে অবহিত করেছি। বিগত ১৩ মাস যাবৎ আমি উপকূলীয় বন বিভাগ চট্টগ্রামের কার্যালয়ে বার বার অভিযোগ করার পরও অদ্যাবধি পর্যন্ত কোনো সমাধান না পেয়ে বুঝা যায় যে, উপকূলীয় বন বিভাগ চট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রাম মৎস্য বন্দরের কর্মকর্তারা যৌথভাবে পরিকল্পিতভাবে অর্থ আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে দরপত্র আহবান করেছেন। এ সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, মাহবুল আলম,ফয়সাল, ইসমাইল ও মোবারক। সংবাদ সম্মেলনে তারা আরো বলেন যে, বিসমিল্লাহ স্টিলের পক্ষ থেকে এ সম্মেলনের মাধ্যমে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিষয়টি দ্রুত সমাধান করে এবং ক্ষতিপূরণ সমেত তাদের পাওনা পরিশোধ করার জন্য অনুরোধ করেন। সেই সাথে ভবিষ্যতে কোন সাধারণ জনগণকে হাতিয়ার করে কোন সরকারি কর্মকর্তা যাতে প্রতারণা করতে না পারে তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য মাননীয় উপদেষ্টাদ্বয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।