বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। জীবনঝুঁকি সত্ত্বেও অপরাধীদের চ্যালেঞ্জ করে দেশ মাতৃকার সেবাই চৌকস সক্রিয় দায়িত্বে শহীদের পদমর্যাদা পেলেন বিদায়ী বীর সেনা কর্মকর্তা । নিজের জীবন উৎসর্গ করে দেশপ্রেমিক দায়িত্বশীল বীর সেনা কর্মকর্তা হিসেবে মানুষের মনেপ্রাণে শ্রদ্ধাভক্তি ভালোবাসায় সিক্ত হলেন। মরনেও হলেন স্মরণীয়।
সৎ সাহসী অন্যায়ের সাথে আপসহীন দেশ প্রেমিকের মৃত্যু নেই। তিনি আজ দেশ কৃতিসন্তান দেশপ্রেমীক বীর সূর্য সন্তান। মরণেও কর্মে গুণে রয়ে গেলেন আমাদের মাঝে। সম্মানিত হলেন আলোচিত হলেন শহীদের মর্যাদায়। তিনি আজ দেশ ও মাতৃভূমির টাঙ্গাইল জেলার থানা, ইউনিয়ন, গ্রাম ও পরিবারের গর্ব। দেশের জন্য প্রাণ দিয়ে শহীদ হয়ে হলেন মহান মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত। হলেন সুপরিচিত ও শীর্ষ আলোচিত।
যা শীর্ষ আলোচিত হয়েছে গণমাধ্যম অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায়। কর্মগুণে তিনি রয়ে যাবেন মানুষের মনে প্রাণে হৃদয়ের মাঝে। দেশ প্রেমিক জনতার সকলের সকলের মুখে মুখে। সর্বস্তরের মানুষের মাঝে।
রাষ্ট্রীয় নির্দেশে দায়িত্ব পালনে জীবন দিয়ে সেনাবাহিনীকে আলোকিত করলেন জনমনে দেশ বিশ্বে । গৌরবে আলোচিত হলেন বীর সেনা কর্মকর্তা তানজিম। ধরতে রাষ্ট্রের কাজে প্রাণ বিসর্জন করে মরলেও হলেন স্মরণীয় সেনাবাহিনী কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট তানজিম।
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলহাজরা মাইজ পাড়া এলাকায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে সন্ত্রাসীদের হামলায় ডাকাতের ছুরিকাঘাতে সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট
তানজিম ছরোয়ার নির্জন (বিএ-১১৪৫৩) নিহত হয়েছে। ঘটনাস্থলে আটক হয়েছে ৭ ডাকাত।
২৪ সেপ্টবর (মঙ্গলবার) রাত ১২টার দিকে অভিযানের
ভোররাতে রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে ছুরি দিয়ে মারাত্মক আঘাতে অতিরিক্ত রক্তপাতে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে যাত্রা পথেই মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হয় । ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জানা গেছে, নিহত অফিসার তানজিম ছরোয়ার নির্জনের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার সদর উপজেলার মিরের বেতকা থানার খারের বেতকা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বিএ-১১৪৫৩ লে. তানজিম ছরোয়ার নির্জন (৩৯ এসটি ব্যাটালিয়ান, ৮২তম লং কোর্স)।
ঘটনাসূত্রে জানা যায়, একটা সোর্সের বরাত দিয়ে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসীর খোঁজ পেয়ে আর্মির একটা টিম অভিযানে গিয়েছিলো। লে. তানজিম নেগোসিয়েট করতে এগিয়ে যায়, এক পর্যায়ে কথা কাটাকাটি হইলে গলায় ৩ বার ছুরি দিয়ে মারাত্মক আঘাত করে। এরপর বাম চোখে একবার আঘাত করে, একদম চোখের ভেতরে ছুরি বসিয়ে দেয়। গলার আঘাত বেশি গভীর হওয়ায় ব্লিডিং হয় প্রচুর। সিএমএইচ এ আনার আগেই মারা গেছে।
ওই এলাকায় অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে একটি ডাকাত দল অবস্থান করছে এমন গোপন তথ্যে রাত ১২টার দিকে অভিযানে যৌথ বাহিনীর একটি দল (৩৯ এসটি বিএন)। অভিযানে মেজর উজ্জ্বল, লেফটেন্যান্ট তানজিমসহ দুইজন জেসিও ছিলেন।
সন্দেহভাজন বাড়িটি ঘিরে ফেলে যৌথ বাহিনী। ডাকাত দল যৌথ বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে দ্রুত ছত্রভঙ্গ হওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় লে. তানজিম দুই সন্ত্রাসীকে চ্যালেঞ্জ করেন। হঠাৎ তারা তানজিমের দিকে গুলি চালায়। এর এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীদের ধরার চেষ্টা করেছিলেন সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা। কিন্তু এ সময় তার ঘাড়ে সন্ত্রাসীদের ছুরির আঘাত লাগে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন এবং তাদের ধরতে ব্যর্থ হন।
পরে সেনা কর্মকর্তা নির্জনকে দ্রুত উদ্ধার করে চকরিয়া খ্রিস্টান হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে রামু সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নিলে ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চিকিৎসক জানান, সেনাবাহিনীর নিহত এই কর্মকর্তার শরীরে ছুরিকাঘাতের পাঁচটি ক্ষতচিহ্ন রয়েছে।