মোহাম্মদ মাসুদ
উৎপাদন সক্ষমতা সত্ত্বেও জ্বালানি সররাহ সংকটে বন্ধের পথে জাতীয় অর্থনীতি ও চট্টগ্রামের উন্নয়নে সম্ভাবনাময় প্রকল্প হাজার মানুষের কর্মসংস্থান নির্ভর বাঁশখালী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র। ধারাবাহিক উৎপাদন ব্যাহত হলে আমদানি নির্ভরে দুর্বল হবে দেশের অর্থনীতি। কর্মসংস্থান হারাবে অনেকেই। বাড়বে লোডশেডিংয়ের তীব্র ভয়াবহতা। বিদ্যুৎ উৎপাদনে চ্যালেঞ্জে অনিশ্চয়তায় ঝুঁকিতে পড়বে সারাদেশ।
দেশে বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৭৮টির মধ্যে অন্যতম।৭০ ভাগ দেশীয় মালিকানা এস আলম গ্রুপের বাঁশখালীর কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র অন্যতম।
সাগর নৌপথ কাঁচামালের সুবিধা চট্টগ্রাম বাঁশখালী গণ্ডামারায় ২৮ হাজার কোটি টাকায় ৬০৬ একর জমিতে দীর্ঘ ৪ বছরে দেশি-বিদেশি ৭ হাজার শ্রমিকের দিন-রাত পরিশ্রমে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়। যা সুপার ক্রিটিকাল প্রযুক্তির হওয়ায় কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রটি পরিবেশ দূষণ করবে না বলে দাবি কোম্পানিটি’র।
জাতীয় গ্রিডে যুক্ত ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। বিদ্যুৎ উৎপাদন ও দেশের অর্থনীতি অবকাঠামোগত উন্নয়নে অবদান। ২হাজার মানুষের কর্মসংস্থান বিশাল কর্মযজ্ঞ।
কয়লার চেয়ে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ তিন গুণ খরচে গত ২২-২৩ অর্থবছরে ২৩ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। তেলে ১ ইউনিট বিদ্যুৎ এ খরচ গড়ে ১৭ কয়লায় ৫ টাকা। গ্যাসে ৪টাকা হলেও সারাদেশে রয়েছে তীব্র গ্যাস সংকট।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে দেশের বেসরকারি খ্যাতের মধ্যে অন্যতম জাতীয় অর্থনীতি ও বাণিজ্যিক রাজধানীর স্থানীয় হাজারো মানুষের জীবন জীবিকা নির্ভরশীল বাঁশখালীর কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র। দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা থাকলেও চাহিদামতো বিদ্যুৎ উৎপাদন বড় চ্যালেঞ্জ। জ্বালানি সংকটে এলসি জটিলতা নানা কারণে বন্ধের পথে অনেক বিদ্যুৎ কেন্দ্র।
বিগত সরকারের অন্যতম সফলতা ছিল বিদ্যুৎ সক্ষমতা। আগে খাম্বা ছিল বিদ্যুৎ ছিল না, এখন সক্ষমতা থাকলেও চালু রাখতে পারছে না। বৈদেশিক মূদ্রার একটা বড় অংশ খরচ হয় জ্বালানিখ্যাতে।
বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্যোক্তা, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ এবং অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন বর্তমান বাস্তবতায় এ বছর চাহিদা মত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ হবে বড় চ্যালেঞ্জ।
দেশের পরিস্থিতি আর্থিক ও ডলার সংকটে নানান সমস্যা সমাধানে বিদ্যুৎ চাহিদা কীভাবে সামাল দেয় সরকার সেটি দেখার বিষয়। সক্ষমতা থাকার পরও চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে না পারাটা সরকারের কাঠামোগত সমস্যা হিসেবেই মনে করছেন উন্নয়ন অভিজ্ঞতার পরিকল্পনাবি বিশেষজ্ঞ বিশ্লেষকরা।
জ্বালানি আমদানি সরবরাহে বিঘ্ন ঘটলে কিছু বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধের ক্ষেত্রে হবে লোডশেডিং। সামনে রয়েছে রোরো ধানের সেচ ও গ্রীষ্মকাল রমজানে বিদ্যুতের হবে আরও সংকট । বিদ্যুৎ কেন্দ্র বসে থাকলেও ক্যাপাসিটি চার্জের নামে কেন্দ্র ভাড়া ব্যয়ে বাড়ছে পিডিবির।
পিডিবির তথ্য অনুযায়ী দেশে বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংখ্যা ৭৮টি। যার মোট উৎপাদন ক্ষমতা ৮ হাজার ৭৭৮ মেগাওয়াট। এর মধ্যে তেল ভিত্তিক ৪৭টি কেন্দ্রের ক্ষমতা ৫ হাজার ৩৬০ মেগাওয়াট।
যৌথ বিনিয়োগে ৭০ শতাংশের মালিকানা দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের ছয়টি প্রতিষ্ঠান ৩০ শতাংশ চীনা প্রতিষ্ঠান সেপকো-থ্রির।
২০১৬ সালে (পিডিবি) সাথে এসএস পাওয়ারের চুক্তির পর যৌথভাবে উদ্বোধন করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং।
৪৫ মাসের মধ্যে প্রকল্প শেষের বাধ্যবাধকতায় ২০১৯ সালের ১৬ নভেম্বর বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় পরে সময় বাড়ানো হয়।
পিডিবি ২৫ বছর উৎপাদিত সব বিদ্যুৎ কিনবে এই শর্তে। বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বাঁশখালী থেকে চট্টগ্রাম মদুনাঘাট পর্যন্ত সঞ্চালন লাইনের ১৯৮টি টাওয়ার বসানো হয়েছে। মদুনাঘাট সাব-স্টেশন গ্রিডে বিদ্যুৎ সঞ্চালিত হবে। বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনটি তৈরি করেছে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)।
প্রকল্পটির বিরুদ্ধে চলছে শুরু থেকেই একের পর এক ষড়যন্ত্রের জেরে ১৩জন নিহত সংঘর্ষে অন্তত তিন শতাধিক লোক আহত হয়েছে। দেশের বিদ্যুৎ জ্বালানি খাত সুরক্ষা ও অর্থনীতির সক্রিয়তায় ও ঝুঁকিমুক্ত বৃহৎস্বার্থে প্রকল্পটির নেতিবাচক প্রভাব সকল বাধা বিঘ্নতা প্রতিবন্ধিতা হোক দ্রুত সমাধান।
উক্ত বিষয়ে পিডিবি পরিচালক কর্মকর্তা বলেন,
বাঁশখালী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মুখপাত্র তিনি বলেন,
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের এপ্রিলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জায়গা অধিগ্রহণ নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষসহ ২০২৩ সাল পর্যন্ত ছেট-বড় ১৮টি সংঘর্ষ হয়। এতে এই পর্যন্ত এসব সংঘর্ষে ১৩ জন নিহত এবং অন্তত তিন শতাধিক লোক আহত হয়েছে।