মোহাম্মদ মাসুদ
চট্টগ্রামের সন্তান সাইফুল আলম মাসুদ। কত ধন-সম্পত্তি কত প্রভাব প্রতিপত্তি। প্রায় দুই লাখ কোটি টাকা আত্মসাতের দায়ে অভিযুক্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। বড় ভাই মারা গেল অক্সিজেনের অভাবে। মায়ের মৃত্যুতে শেষ বিদায় নেই রক্তের সন্তান। মায়ের মৃত্যুর সংবাদে শীর্ষ আলোচিত হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া অনলাইন প্রিন্ট পত্রিকার সর্বস্তরের মানুষের মাঝে সারা দেশজুড়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্রুপ শীর্ষ শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যানের মায়ের ইন্তেকাল।
সাইফুল আলম মাসুদ ওরফে এস আলম। তিনি ছাড়াও তার ৬ ভাই আবদুল্লাহ হাসান, ওসমান গনি, আবদুস সামাদ, রাশেদুল আলম, শহিদুল আলম ও মোরশেদুল আলমসহ কেউ জানাজায় উপস্থিত হতে পারেননি।
দুনিয়ার সবকিছুর ঊর্ধ্বে প্রাণাধিকপ্রিয় মায়ের শেষ বিদায়েও নেই সন্তান ও পরিবার। মায়ের মৃত্যুতে গভীরশোকে পাশে নেই নিজ সন্তান পরিবার। যা সারাদেশে সংবাদ শিরোনামে আলোচিত হয় দেশ বিশ্বে। আবারোও এস আলম গ্রুপের অবস্থান প্রতিক্রিয়ায় নানা গুঞ্জন। ক্ষমতাচ্যুত সরকারের অন্যতম সহায়ক সম্পদকাণ্ডে দুর্নীতি অনিয়ম ব্যাংক লুটপাট নানাকান্ডে শিষ্য আলোচিত হয়। যা সরকার পতনের আগে সরকারের আমলে ও বর্তমান অন্তবর্তী কালীন সরকারের আমলেও আলোচিত সমালোচিত এখনো জনমনে দেশজুড়ে।
সাইফুল আলম মাসুদ তিনি সারা দেশ বিশ্বে আলোচিত এস আলম গ্রুপ নামে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে লাফেই হলেন জিরো থেকে হিরো। কাড়িকাড়ি টাকার পাহাড়। একনামে একবাক্যে পরিচিত দেশ-বিদেশের শীর্ষ আলোচিত। সম্পদকাণ্ডে নেতিবাচক আইনি জটিলতায় মায়ের শেষ বিদায় পাশে নেই নিজ সন্তান ও পরিবার প্রিয়জন।
সকল মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা ভক্তি সম্মান করে বলছি। ভালো মন্দ নিয়েই দুনিয়া ও দুনিয়ার মানুষ ও অমানুষ। তিনি মহীয়সী নারী,যার কারণে আজকে ব্যাক্তি সাইফুল আলম মাসুদ পুরো বিশ্বে এস আলম নামে পরিচিত। ইতিহাস স্বাক্ষী একজন সফল ব্যাক্তির সবচেয়ে কাছের মানুষ তার মা। মায়ের শেষ বিদায়ের পাশে নেই সন্তান। বাস্তবতায় শিক্ষা নেওয়া উচিত মানুষের এমন অবিশ্বাস্য বাস্তবতা থেকে। অর্থবিত্ত ক্ষমতার সম্পদ সবকিছু নয়। সম্পদ দিয়ে কি লাভ হলো? মায়ের শেষ মৃত্যু,মরামুখ কোনটাই দেখা হলো না। এ কেমন দুর্ভাগ্য নির্মম বাস্তবতা বেদনাদায়ক। যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।
আহা,কি অদ্ভুত এই পৃথিবী পৃথিবীর মানুষ! এই অর্থ বিত্তের কোনো দাম রইলো না। মৃত্যুর সময় মায়ের পাশে থাকতে না পারা। কতোই না কষ্টের কতোই না বেদনাদায়ক। একমাত্র সন্তানই বোঝে। “অর্থই অনর্থের মূল” আজ শেষ বিদায়ের পাশে নেই সন্তান। দুনিয়া জীবন খুবই বৈচিত্র্যময়। খুবই রহস্যময়। এর বাস্তবতায় শিক্ষায় আমাদের অনেক কিছু শিখার আছে। সন্তানকে নৈতিক শিক্ষা দেওয়া অত্যাবশ্যক। আজকে এত ধন দৌলত থাকার পরও ছেলে মায়ের জানাজায় আসতে পারছে না। এই টাকার মূল্য কি!এর পরও মানুষ এসব দেখে শিক্ষা নেয় না। অর্থমোহ লোভের পিছনে ছুটছে আর ছুটছে।
হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েও বিদেশে পালিয়ে থাকতে হচ্ছে। জানাজায় একটা সন্তানও থাকতে পারলো না? এতো টাকা ক্ষমতা নাম যশ দিয়ে কি হবে? সব টাকা বিফলে গেল। এটা থেকে সব মানুষের শিক্ষা নেওয়া উচিত। এস আলম হচ্ছে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতি,আজ ন্যায় নীতির মধ্যে চললে, আজকের রাজকীয়ভাবে মায়ের দাফনে অংশগ্রহণ করতো। সর্বস্তরের জনতার ঢলে জনশ্রুতে আলোড়িত আলোচিত হতো দেশ বিশ্বে। মায়ের দাফন হতো স্মরণ কালের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে উনার দাফন হতো।
মহান সৃষ্টি কর্তার বিচারে তিনি কাউকে ক্ষমা করেন না। সময়ের ব্যবধানে প্রয়োজনে থেকে তিনি তার সঠিক বিচার করে থাকেন। সবাই সাবধানে,কর্মের ফল সবাইকে ভোগ করতেই হবে। আহ! কি কষ্ট.. ছেলেরা চাইলে বিমান কিনে মুহূর্তের মধ্যে চলে আসতে পারে কিন্তু সময় ও পরিস্থিতি তাদের জন্য নিষ্ঠুর, সময় সে সুযোগ দিচ্ছে না, টাকা চাইলে অনেক কিছু করতে পারে কিন্তু আজ এই সামান্য কাজটা করতে পারছে না যেটা পারত সততা কিন্তু সততা অর্জন করতে টাকা লাগে না।
এত ধন সম্পদ থেকে লাভ কি নিজের মায়ের সে জানাজায় উপস্থিত হতে না পারলে। হায় টাকা পয়সা,হায় জীবন, দুনিয়ার সবকিছুই আছে কিন্তু মায়ের বিদায়ে আপন কেউ নেই, রক্তের কেউ নেই। আছে সম্পদ আছে কাড়িকাড়ি টাকা। ইচ্ছে করলেই বিমান কিনেও হাসতে পারে দেশে। কিন্তু আইনি জটিলতা নানা অনিয়মে প্রশ্নবিদ্ধ এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও পরিবারের সদস্যরা। সত্যিই অর্থ ক্ষমতায় সবকিছু হয় না। মহান আল্লাহ সবার কপালে সবকিছু দেন না। যে যেভাবে যা চাই তাই-ই পেয়ে থাকে তার কর্মফলের গুনে । বাস্তবতায় অবিশ্বাস্য ও শ্বাসরুদ্ধকর কি বেদনাদায়ক! তবুও মানুষ অর্থের মোহ দূর্নীতি লুটপাট অন্যায় চাঁদাবাজি ছাড়ে না! বাস্তবতায় হোক শিক্ষা। আর বেআইনি সম্পদ কান্ডে অক্ষমতা অর্থ আভিজাত্য মহো অনিয়ম ভোগ বিলাসিতা নয়। সততায় স্বচ্ছতায় সত্যতায় হোক প্রতিটি মানুষের জীবন চিন্তা চেতনা ও ভুবন।
জানাজায় উপস্থিত বেশিরভাগের মুখে ছিল এ কথা। কত ধন-সম্পত্তি এবং কত প্রভাব প্রতিপত্তি। কিন্তু তারপরও মায়ের জানাজায় উপস্থিত হতে পারেননি দেশের অন্যতম শিল্পপতি সাইফুল আলম মাসুদ এবং তার ভাইয়েরা। এটি দেখে দুর্নীতি এবং লুটপাটকারীদের শিক্ষা নেওয়া উচিত বলে মনে করেন অনেকে।
অনেকের মুখে মুখে আলোচনায় শুনা যায়৷ ‘কি কাজে এলো এত টাকা, ধন-সম্পদ। মৃত মায়ের মুখটা শেষবারের মতো দেখতে পারলেন না।
আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদ ব্যাংকিং খাতে দোর্দণ্ড প্রতাপশালী এক ব্যক্তিতে পরিণত হন। খোদ ব্যাংকিং খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের যোগসাজশ ও সরকারের বিভিন্ন এজেন্সিকে ব্যবহার করে ব্যাংক দখল, একাধিক ব্যাংকের লাইসেন্স নেওয়া, বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে ঋণের আড়ালে হাজার হাজার কোটি টাকা সরিয়ে নেন বলে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একাধিক উপদেষ্টা এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। দেশের সর্ববৃহৎ ব্যবসায়িক গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের সম্পদ বিক্রি করে আমানতকারীদের দায় মেটানো হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
আল্লাহ সকলকেই বুঝার তৌফিক দান করুক। আল্লাহ সকলকে হেদায়েদ দান করুন। মরহুমার জান্নাত কাৃনায় আল্লহ উনাকে জান্নাতবাসী করন,আমিন।
উল্লেখ্য : আজ ২০ অক্টোবর (রবিবার) ভোরে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যানের মাতা চেমন আরা বেগম (৯২) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করছেন।(ইন্নালিল্লাহে…রাজেউন)। বিমানযোগে ঢাকা থেকে আনা হচ্ছে মরদেহ। চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদসহ বিদেশে অবস্থানকারী পরিবারের কোন সদস্যই মরহুমার নামাজে জানাযা ও শেষ বিদায়ে উপস্থিত থাকতে পারছেন না বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে। আছরের নামাজ শেষে পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মরহুমার নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হবে। তার নামাজে জানাযা শেষ তাকে পটিয়া পৌরসভার এস আলম জামে মসজিদের পাশে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
মৃত্যুকালে তিনি ৬ ছেলে ও ৫ মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন ও গুণাগ্রাহী রেখে গেছেন। এর আগে গত ২০২০ সালে করোনা আক্রান্ত হয়ে তার বড় ছেলে মোরশেদুল আলম মৃত্যুবরণ করেন। এদিকে মরহুমার মরদেহ নামাজে জানাযার উদ্দেশ্যে বিমানযোগে সরাসরি পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আনার যাবতীয় প্রস্তুতি চলছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়।
এদিকে গত ৫ আগস্ট দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতির পূর্বেই এস আলম পরিবারের সকল সদস্য দেশ ত্যাগ করে সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছে বলে জানা যায়। যার ফলে এস আলম গ্রুপের পরিবারের বিদেশে অবস্থানকারীরা জানাজায় অংশগ্রহণ করছে না বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। মরহুমার নামাজের জানাযার উদ্দেশ্যে সকাল থেকে পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পানি ছিটানোসহ চলছে নানা প্রস্তুতি। এর আগে গত ২০২০ সালে করোনা আক্রান্ত হয়ে তার বড় ছেলে মোরশেদুল আলম মৃত্যুবরণ করেন।
মরহুমার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। সর্বশ্রেষ্ঠ পরিকল্পনাকারী আল্লাহ্। মহান আল্লাহ সবাইকে ক্ষমা করুন। হেফাজত করুন। আল্লাহ মরহুমাকে নাজাত দান করুক। মরহুমার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। আমিন