ডেক্স নিউজ
অমুসলিমরাও হতে পারবে জামায়াতে ইসলামীর সদস্য। যদি শপথ নেয় জামাতের মৌলিক ৪ বিষয়ের উপরে। মেনে নেয় জামাতের সাংগঠনিক কার্যক্রমের ধারাবাহিক কর্মসূচি।
রংপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পীরগাছা সদর ইউনিয়ন শাখায় হিন্দুদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) রাতে উপজেলা জামায়াতের অফিসে কমিটির নাম ঘোষণা করেন ইউনিয়ন জামায়াতের আমির আব্দুর জব্বার। বিষয়টি নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হলে পীরগাছা উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মোস্তাক আহমেদ জানান, রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অমুসলিমদের নিয়ে দল থেকে এখনও কোনো কমিটি করা হয়নি। সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ‘অমুসলিম নাগরিক সেবা কমিটি’ নামে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এদিকে দলটির কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে বলা হচ্ছে, রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারবেন যে কেউ। এমনকি অমুসলিমদের ক্ষেত্রেও দলভুক্ত হতে বাধা নেই, যদি তারা দলের গঠনতন্ত্রের চারটি বিষয়ে একমত হয়ে শপথ নেন।
জামায়াতে ইসলামীর প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক আতাউর রহমান সরকার বলেন, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য যারা একনিষ্ঠভাবে কাজ করবে, জামায়াতের নিয়ম শৃঙ্খলা এবং রাজনৈতিক সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নে যারা গুরুত্ব প্রদান করবে তারা অমুসলিম হলেও জামায়াতের সদস্য হতে পারবেন।
তিনি বলেন, নাগরিক অধিকারের ক্ষেত্রে জামায়াত সবার জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করে। রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতের একটি আদর্শিক অবস্থান রয়েছে। আদর্শিক অবস্থান ও নাগরিক অধিকার এক নয়। জামায়াত ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা দলের নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার হরণে বিশ্বাস করে না।
এছাড়াও বিষয়টি সংগঠনের গঠনতন্ত্রের পরিশিষ্ট-১১-এ সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে বলেও জানান জামায়াতের কেন্দ্রীয় এ নেতা।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, চার বিষয়ে একমত হয়ে থাকলে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ যেকোনো ধর্মাবলম্বী মানুষই অমুসলিম শাখার অধীনে জামায়াতে দলভুক্ত হতে পারবেন। এজন্য চারটি বিষয়ে শপথ নিতে হবে তাদেরকে। সেগুলো হলো:
১. বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সদস্য বা সদস্যা হিসেবে জামায়াতের নিয়ম শৃঙ্খলা ও সিদ্ধান্তসমূহ নিষ্ঠার সঙ্গে মেনে চলতে হবে।
২. জামায়াতের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নকে গুরুত্ব প্রদান করতে হবে।
৩. বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য একনিষ্ঠভাবে ভূমিকা পালন করতে হবে।
৪. উপার্জনে অবৈধ পন্থা অবলম্বন করা যাবে না।
উল্লেখ্য : তথ্যমতে ও জানামতে, জামায়াতে ইসলামী কুড়ি – পঁচিশ বছর আগে থেকেই অমুসলিম শাখা চালু করেছে। হয়তো আরো আগে থেকেই হতে পারে। আর চারদলীয় জোট সরকারের সময় সেই কাজ বেশ সম্প্রসারিতও ছিলো। ২০০৩-০৪ ইং সনের দিকে শুনতাম তাদের অমুসলিম বিশেষত হিন্দু সমর্থক বা সহযোগী সদস্য ৩০ হাজারের উপরে।
অমুসলিমদের কার্যক্রমে জামায়াত সম্পূর্ণ আলাদা ফরমেট ব্যবহার করে। স্বাধীনতা-সার্ভভৌমত্ব, দেশপ্রেম, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, সমাজ সেবা ইত্যাদি ইত্যাদি ইস্যুতে তারা জামায়াতের সঙ্গে ঐকমত্যের ভিত্তিতে কাজ করবে। তাদের নীতি, কর্মসূচি, পদ্ধতি অনেক কিছুই আলাদা।
জামায়াত ছাড়াও ইসলামী দলগুলোর মধ্যে সম্ভবত ইসলামি আন্দোলন ও খেলাফত মজলিসেও এই অপশন চালু আছে (সীমিত পরিসরে হলেও)।
রাজনীতিতে ক্ষমতা চর্চা কিংবা ক্ষমতায় যাওয়া, রাষ্ট্র পরিচালনা যেহেতু টার্গেট, সেখানে অমুসলিমদের মাইনাস করে পথ চলা কি করে সম্ভব!? দেশে পরিপূর্ণভাবে শরিয়া আইন চালু হলেও তো তাদের মাইনাসের সুযোগ নেই বরং দেশের কার্যে তারাও অংশ গ্রহণ করবে।
যারা ব্যাপক আকারে জামায়াতের হিন্দু শাখা নিয়ে সমালোচনা করছেন, বিশেষ করে ইসলাম পন্থীরা তাদের কাছ থেকে জানতে চাই এই ব্যাপারে আপনার ইসলামি দলের অবস্থান,বক্তব্য ও কর্মসূচি কি!!??
বাদবাকি আওয়ামীলীগ বিএনপির এ নিয়ে সমালোচনায় কিছুই যায় আসে না। অথবা তাদের এই সমালোচনা করার নৈতিক অধিকারই নেই। ধন্যবাদ।