চট্টগ্রাম শহরের প্রায় ৮০ শতাংশ পাহাড় ও টিলা ইতিমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। বিকল্প খোঁজ না করে উন্নয়নের নামে নির্বিচার পাহাড় ও টিলাগুলো কাটা হচ্ছে। ফলে পাহাড়ি জীববৈচিত্র্য যেমন বিলুপ্ত হচ্ছে, তেমনি নগরে জলাবদ্ধতা এবং পাহাড়ধসে প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। এই অবস্থায় পাহাড় কাটা বন্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা জোরদারের পাশাপাশি পরিবেশকর্মীদের নিয়ে গঠিত বেলার সমন্বয় কমিটির এগিয়ে আসা উচিত।
বৃহস্পতিবার, ০৫/১২/২০২৪ নগরীর বনজৌর রেস্টুরেন্টে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) পাহাড় কাটা প্রতিরোধে জোটভুক্ত প্রতিনিধিদের মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। সকালে নগরের জিইসি মোড়ের একটি রেস্তোরাঁয় এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নগরের পাহাড় কাটা–সংক্রান্ত সার্বিক বিষয়ের ওপর তথ্যচিত্র তুলে ধরেন বেলা চট্টগ্রামের বিভাগীয় সমন্বয়কারী মনিরা পারভীন। তিনি বিভিন্ন গবেষণা তথ্যের আলোকে চট্টগ্রামের ৮০ শতাংশ পাহাড় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে বলে উপস্থাপন করেন।
আলোচনায় অংশ নেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বনবিদ্যা ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক কামাল হোসেন, পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের সুভাষ বড়ুয়া, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. ইকবাল সরোয়ার প্রমুখ।
কামাল হোসেন বলেন, ‘চট্টগ্রামের পাহাড় দিন দিন কমে যাচ্ছে। জনসংখ্যার চাপের পাশাপাশি প্রশাসন এবং আমাদের উদাসীনতায় পাহাড়ের ওপর চাপ বাড়ছে। বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় কাটা চলছে। এই অবস্থায় শুধু প্রশাসনিক ব্যবস্থার দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না। শিক্ষক, সাংবাদিক, উন্নয়নকর্মী, স্বেচ্ছাসেবকসহ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’
বক্তারা বলেন, পাহাড় কাটা রোধে অবৈধ বসতির পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা, পাহাড়ে দেশীয় প্রজাতির গাছ লাগানো, এলাকাভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন, পাহাড়ের শ্রেণি পরিবর্তন প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেন।
সভায় আরও মতামত ব্যক্ত করেন উন্নয়ন সংগঠন ইলমার নির্বাহী পরিচালক জেসমিন সুলতানা, ইপসার প্রকল্প ব্যবস্থাপক সানজীদা আকতার, পরিবেশবিদ স ম বখতিয়ার, বেলার নেটওয়ার্ক সদস্য আলীউর রহমান, সাংবাদিক মিজানুর রহমান, শ্যামল রুদ্র, পুষ্পেন চৌধুরী, ইব্রাহিম খলিল প্রমুখ।