আলোর স্বপ্নে বিপ্লব ডানা মেলে
দুপুর নাগাদ একটি প্লেটের ছবি ছড়িয়ে পড়ে দিগ্বিদিক
প্রত্যেকে বলে, খালি প্লেটটি খাবার গিলে খেতে উন্মুখ…
মুখ ফুটে কেউ বলে না, এ-তো পৃথিবীর ছবি!
অথচ উপাসনালয়ের দরজায় বুভুক্ষু মানুষের সংখ্যা বাড়ে।
প্রভু ছদ্মবেশে দাঁড়ায় ভিক্ষুক সারিতে
আয়োজন চলে নতুন নতুন উপাসনালয় নির্মাণের লোহা, ইট, বালি, সিমেন্ট বোঝাই ট্রাকের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ে…
সময়ের সাথে আমিও বুঝে গেছি পৃথিবীর গণিত সস্তা খাবারের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েও বলি না, খাবার চাই…
থালাটির ব্যবহার ইদানীং পাল্টেছে…
আমার হাতে সে হয়ে উঠছে ধারালো গোলাকার ফলা…
আমি ফিলিস্তিনী সে-ই যোদ্ধা,
জীবনে একবারের জন্য দেখতে চাই একটি মুক্ত আকাশ
তাকে ইঙ্গিত করে বলো না এ আমার যুদ্ধ-প্রস্তুতি থালাটি প্রবল গতিময় এক সময়কে সঙ্গী করে প্রভুকে অনুসরণ করে…
বুভুক্ষু মানুষের অধিকাংশই চক্ষুষ্মান নয়; তারা অন্ধও নয়
তাদের প্রত্যেকের চোখে এক টুকরো আলো, বিপ্লবের…লাল টিপ ঠাঁই নেবে বন্দুকের নিশানায়
তোমায় সাজাব জেনে
পণ করেছি নিজের সাথে
নির্ঘুম আমি,
আমার একেকটি রাত;
উৎকন্ঠায় স্থির আমার দাঁড়িয়ে থাকা, শান্ত বালু চরে
একটি সূর্যাস্তের প্রতীক্ষা,,য়
খসে পড়া এক টুকরো আলোর জন্য।
বাজি রেখে জলের গভীর থেকে মুঠোয় তুলে নিবো ডুব সাঁতারে
শত, হাজার, লক্ষ কিংবা একটি লাল টিপ গড়তে সূর্যাস্তের এক টুকরো আলো চাই…
হে প্রিয় সেনার দল, জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করে তোমাদের
পৃথিবী কি কখনো চেয়েছে তেমন উপহার, ছোপ ছোপ রক্তের দাগ?
প্যালেস্টাইন, আরাকান বা কাশ্মীরের পথে পথে দেখা যদি মেলে তোমাদের পায়ে পায়ে
তবে জেনো, একদিন লাল টিপ ঠিকই ঠাঁই নেবে বন্দুকের নিশানায়
এ বিশ্বাস, তোমার প্রিয়তমার!
আর ভুলে যেও না, লাল টিপ সাথে রেখে প্রেমিকাকে ছোঁয়ায়!
নীরব আকাশের খসে পড়া তারাদের ক্লান্তির শেষ ক্ষণে, পুবের মুখরিত সময় জানান দেয়
আমার প্রতীক্ষা একটি সূর্যাস্তের জন্য
খসে পড়া এক টুকরো আলোর জন্য।।
আমার ডুব সাঁতারে কি জাগবে তোমার আলো
আমার প্রাণ কি তবে মুখরিত হবে
আত্নহারার নাচে!
জানি না…
তবু জানি
সাগরের নোনা জলে; জলের স্পর্শে যদি খসে পড়তে শুরু করে আমার হাতের মুঠো
আর লাল টিপের স্বপ্ন
হে অামার সেনারা, তবু জেনো, একদিন লাল টিপ ঠাঁই নেবে বন্দুকের নিশানায়…
তাই
তোমাকে সাজাব জেনে
উৎকন্ঠায় স্থির আমার সময়
প্রতীক্ষাকাতর চোখ রাখে নীল সাগরের চোখে
একটি সূর্যাস্ত
আর
এক টুকরো আলোর জন্য…জলজ অন্ধকারে মুছে যাক অক্ষমতা
সঙ্গোপনে কোথাও তুমুল বৃষ্টি ঝরে আজ
এক আকাশ ঘন কালো মেঘ
অন্ধকার ছড়ায় ঘরময় ,
মুগ্ধ অন্ধকার সমর্পণে ডুবে যাই…
আমাকে ডাকে না কেউ বৃষ্টি ঝরার ক্ষণে
মুহুমুহু যেন না ডাকে কেউ দুর্নিবার পিছুটানে
অন্ধকারে ঝুম বৃষ্টি নামে ইশারায়,
তখন কালো মেঘ আর
মায়াময় অন্ধকারে
নিঃসঙ্কোচ একটি মুখ
বৃষ্টি হয়ে কড়া নাড়ে ঘরের দরজায়
তাড়াহীন সময় বড় যত্নে গভীর নৈঃশব্দ্যের হাত ধরে দরজা খোলে
ওপার থেকে কচি একটি হাত এগিয়ে আসে মুখের খুব কাছে
বিরিয়ানীর গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে ঘরময়;
বলে, বিশ্বাস হইতাছে তো ? খাইয়া আইছি ইটের হোটেলের বিরিয়ানী!
রাজপথের রোদ্দুরে মলিন সে কচি মুখ
ধুলোর আস্তর জমে যাওয়া বিবর্ণ চুল
উলঙ্গ পায়ের তালুতে কালচে ক্ষত
মিলিয়ে যায় অন্ধকারে…
তখনো বাইরে বৃষ্টি ঝরে শব্দহীনতায়
জলজ অন্ধকারে অশ্রু ভিজে গিয়ে বলে—
প্রতিবার আমি ঝরি নতুন জন্মে…ক্রমশ বেদনাহীন দৃষ্টি মেলে দেখি
বৃষ্টি গড়িয়ে পড়ে কপালে, বুকে
গন্তব্য ভুৃলে বৃষ্টির ফোঁটা
সোনালী রঙে ঝরে আমার হাতে
বলে, টাকা জমাও! তোমারেও খাওয়াইতে লইয়া যামু ইটের হোটেলের বিরিয়ানী!
পিতা হয়ে অক্ষমতায় বয়ে বেড়াই সে সোনা-রঙ
বিশ টাকা দামে…
