ঢাকা, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৫, ২৮ চৈত্র, ১৪৩১, ১২ শাওয়াল, ১৪৪৬
সর্বশেষ
স্মরণ সভা সফলে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ:চসাস
হাটহাজারী উপজেলায় ১৩ টি কেন্দ্রে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা-২০২৫ অনুষ্ঠিত
এসএসসি পরীক্ষার্থীদের মাঝে মিরসরাই ছাত্রদলের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
বাংলাদেশেকে ঘিরে ভারত, আমেরিকা, চীনের ত্রিমুখী দ্বন্দ্বের অর্ন্তনিহিত কারণ ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ
চট্টগ্রাম ফাউন্ডেশনের গঠনতন্ত্র,কার্যবিধি প্রণয়ন সংক্রান্ত সভা
কিশোর গ্যাং- সমাজের অবক্ষয় ও করণীয়
বিশ্ব সন্ত্রাসী ইসরাইল’র নৃশংসতা গণহত্যা :দেশবিশ্বে তীব্র নিন্দা বিক্ষোভ প্রতিবাদ
সন্দ্বীপের সীমানা নির্ধারণের দাবিতে মানববন্ধন:সন্দ্বীপ অধিকার আন্দোলন
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘অদম্য একুশ ‘র আনুষ্ঠানিক যাত্রা ও ঈদ পুনর্মিলনী

ইপসা আয়োজিত নারী দিবসের আলোচনা সভায় ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবী

সাম্প্রতিক সময়ে সারা দেশব্যাপি ধর্ষণের মাত্রা যে পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে তা শুধু উদ্বেগজনক নয় বরং এটা নারী উন্নয়ন ও নারীর অগ্রযাত্রার পথে বড় ধরনের অন্তরায়। পূর্বের নারী ও শিশু ধর্ষণের যে ঘটনাগুলো ঘটেছে সেগুলোর সত্যিকারের ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারলে বর্তমানে চলমান ধর্ষণ ঘটনাগুলো না ঘটার সম্ভাবনা খুব বেশি থাকতো। কিন্তু অতীতের বিচারহীনতার কারণে বর্তমানে এই অপরাধের সংখ্যা বেশি হচ্ছে। ন্যায়বিচারের স্বার্থে ধর্ষণকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারলে শিশু ধর্ষণের পরিমাণ কমবে না বরঞ্চ দিন দিন বৃদ্ধি পাবে। আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে ইপসা কর্তৃক আয়োজিত “নারী ও শিশু নির্যাতন মামলাসমূহের ন্যায়বিচারঃ প্রত্যাশা ও করণীয়” বিষয়ক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব মতামত ব্যক্ত করেন। ইপসা’র প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ আরিফুর রহমানের সভাপতিত্বে এ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এডভোকেট মো. মফিজুল হক ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ও আইএসডিই বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এস. এম. নাজের হোসাইন। এতে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন ইপসা’র প্রোগ্রাম অফিসার সেতারা রুদ্র। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মহানগর পিপি এডভোকেট মো. মফিজুল হক ভূঁইয়া বলেন, সকল উন্নয়ন সংস্থাগুলোকে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে একসাথে একটি একটি বিষয় নিয়ে কাজ করতে হবে। একসাথে সব সংস্কার না করে পৃথক বিষয় নিয়ে কাজ করা শুরু করলে ধীরে ধীরে বদলাবে সবকিছু। তিনি আরও বলেন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে। ধর্ষণ ও ধর্ষককে সামাজিকভাবে ঘৃণা করতে হবে এবং এখানে পারিবারিক ও সামাজিক শিক্ষা খুব বেশি জরুরি।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ২০১৮ সালের চাঞ্চল্যকর শিশুধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল নেত্রকোনায় চতূর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যা, একই বছর ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের দিন নোয়াখালীর সুবর্ণচরে স্বামী-সন্তানদের বেঁধে রেখে নারীকে ধর্ষণ, ২০১৯ সালে চট্টগ্রামের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকায় গৃহকর্মী শিশু রাত্রীকে (১৪) গৃহে আটক রেখে ধর্ষণ এবং একই বছর হাটহাজারীর চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্রী তুহিনকে (১৩) ধর্ষণ করে খুন ও লাশ গুমের ঘটনাগুলো ঘটেছিল এবং যেগুলোর ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় এখনও ভুক্তভোগী ও সাধারণ জনগণ আন্দোলন করছে। এ মামলাগুলোর ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হলে সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া আছিয়া (৮) ও নিলুফা (১১) লোমহর্ষক ধর্ষণসহ অন্যান্য ধর্ষণ ঘটনাগুলো আর ঘটতো না বলে অপরাধ বিশেষজ্ঞ ও মানবাধিকার কর্মীরা মনে করছেন।

ইপসা’র উপ পরিচালক মোহাম্মদ শহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় ধারণাপত্রের ওপর বক্তব্য রাখেন ব্রাইট বাংলাদেশ ফোরাম-বিবিএফ’র প্রধান নির্বাহী উৎপল বড়ুয়া, ব্র্যাক’র বিডিসি এনামুল হাছান, স্বপ্নীল ব্রাইট ফাউন্ডেশন প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ আলী শিকদার, অপরাজেয় বাংলাদেশ’র চট্টগ্রামের প্রধান সমন্বয়কারী জিনাত আরা বেগম, সংশপ্তক’র লিটন চৌধুরী, ইপসা’র পরিচালক (কেএমফরডি) মোহাম্মদ শাহজাহান, পরিচালক (সমাজ উন্নয়ন) নাছিম বানু শ্যামলী এবং ইপসা’র সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আলী শাহীন।বক্তারা আরও বলেন, অত্যন্ত দুঃখজনক ও উদ্বেগজনক বাস্তবতা এই যে, প্রতিদিনই নারী ও শিশুধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনা শিরোনামে আসে। গৃহকর্মী নির্যাতন, যৌন নিপীড়িন, ধর্ষন ও পাচারের মতো অপরাধগুলো এখনো সমাজে বিদ্যমান।

নির্যাতিতদের আইনের মাধ্যমে ন্যায়বিচার পেতে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি সচেতন, মানবিক, সহানুভূতিসম্পন্ন এবং আইনি হতে হবে। বিচারব্যবস্থায় নারী শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা, দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া গ্রহণ করাসহ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য মিডিয়া, বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, উন্নয়নকর্মী ও মানবাধিকারকর্মীসহ সকল স্তরের সমাজের মানুষকে এই বিষয়ে সচেতন হতে হবে। ধর্ষক যাতে শিশুর বা গৃহকর্মী শিশুর দারিদ্র্যতার সুযোগ নিয়ে সমঝোতার মাধ্যমে আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে বেরিয়ে আসতে না পারে সে বিষয়ে সবাইকে সজাগ ও সচেতন থাকার আহবান জানানো হয়। সভায় অংশগ্রহণকারী সবাই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ধর্ষণমূক্ত বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে যার যার অবস্থান থেকে অবদান রাখার বিষয়ে ঐক্যমত পোষণ করেন। সভায় নারী ও শিশুধর্ষণের প্রতিটি ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া এবং নারী ও শিশুর সুরক্ষা নিশ্চিত করাসহ ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবী জানানো হয়।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

ফেসবুক পেজ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০  
error: protected !!

Copyright© 2025 All reserved