নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নিজেকে ‘ইমাম মাহাদি’ দাবি করা সেই নুরুল হক ওরফে ‘নুরাল পাগলার’ ম’রদেহ তুলে নিয়ে পু’ড়িয়ে দিয়েছে উত্তেজিত বিক্ষুব্ধ তৌহিদী জনতা। পুলিশ খবর পেয়ে বাঁধা দিলে পুলিশ আমলার শিকার হয়। সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এর আগে সেখানকার দরবার শরিফ ও বাড়িতে হা’মলা, ভা’ঙচুর ও অ’গ্নিসংযোগ করেন বি’ক্ষুব্ধরা। তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন অন্তবর্তী কালীন সরকার।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জুমার নামাজের পর গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের জুড়ান মোল্লাপাড়ায় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদুর রহমান জানান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একদল তৌহিদি জনতা আগে থেকে সংগঠিত হয়ে দরবার শরিফ ও তার বাড়িতে হা’মলা চালায়। শুরু হয় ব্যাপক ভা’ঙচুর ও অ’গ্নিসংযোগ। হা’মলায় অন্তত ৫০ জন আ’হত হন, যাদের মধ্যে দরবারের ভক্তরা ছিলেন সংখ্যায় বেশি। এ সময় ইউএনওর গাড়ি এবং পুলিশের দুটি গাড়ি ভা’ঙচুর করা হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে সেনাবাহিনী ও র্যাব মোতায়েনের পর।
ঘটনার সূত্রপাত নুরুল হকের কবর নিয়ে। সম্প্রতি ঢাকার একটি হাসপাতালে মৃ’ত্যু হলে তাকে গোয়ালন্দ দরবার শরিফে মাটি থেকে উঁচু স্থানে কাবা শরিফের আদলে একটি কাঠামো বানিয়ে দাফন করা হয়। বিষয়টি নিয়ে কয়েক দিন ধরেই এলাকায় উ’ত্তেজনা চলছিল।
স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানে উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করে, একটি কমিটি গঠন করে এবং পরিবারকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময়ও দেয়। কিন্তু শুক্রবারের জুমার পর তৌহিদি জনতা শহীদ মহিউদ্দিন আনসার ক্লাবে জড়ো হয়ে বি’ক্ষোভ করে এবং এরপর হা’মলায় অংশ নেয়।
প্রথম দফার হা’মলার পর দ্বিতীয় দফায় বাড়িতে গিয়ে কবর খুঁড়ে ম’রদেহ উত্তোলন করে তারা। পরে সেটি মহাসড়কের মোড়ে নিয়ে আ’গুন দিয়ে পু’ড়িয়ে ফেলে।
এ সময় বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, নুরুল হক নিজেকে ‘ইমাম মাহাদি’ ও ‘খোদা’ দাবি করতেন, নাউজুবিল্লাহ, যা তারা শরিয়তবিরোধী বলে মনে করেন। তাদের ভাষ্য, কবর পুড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে তার ‘ভণ্ডামির অবসান’ হয়েছে।
নুরুল হকের ছেলে মেহেদী নূর জিলানী এর আগে গণমাধ্যমকে বলেন, বাবা শরিয়তের আলোকে ওছিয়ত অনুযায়ী দাফন করা হয়েছিল, ১২ ফুট নয়, ৩-৪ ফুট উঁচু হবে। তিনি দাবি করেন, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, আশির দশকে নুরুল হক নিজেকে ‘ইমাম মাহাদি’ দাবি করে এলাকায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেন। পরে চাপের মুখে এলাকা ছাড়লেও কিছু ভক্তসহ তিনি পুনরায় ফিরে এসে দরবার প্রতিষ্ঠা করেন।