ঢাকা, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৫, ২৮ চৈত্র, ১৪৩১, ১২ শাওয়াল, ১৪৪৬
সর্বশেষ
স্মরণ সভা সফলে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ:চসাস
হাটহাজারী উপজেলায় ১৩ টি কেন্দ্রে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা-২০২৫ অনুষ্ঠিত
এসএসসি পরীক্ষার্থীদের মাঝে মিরসরাই ছাত্রদলের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
বাংলাদেশেকে ঘিরে ভারত, আমেরিকা, চীনের ত্রিমুখী দ্বন্দ্বের অর্ন্তনিহিত কারণ ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ
চট্টগ্রাম ফাউন্ডেশনের গঠনতন্ত্র,কার্যবিধি প্রণয়ন সংক্রান্ত সভা
কিশোর গ্যাং- সমাজের অবক্ষয় ও করণীয়
বিশ্ব সন্ত্রাসী ইসরাইল’র নৃশংসতা গণহত্যা :দেশবিশ্বে তীব্র নিন্দা বিক্ষোভ প্রতিবাদ
সন্দ্বীপের সীমানা নির্ধারণের দাবিতে মানববন্ধন:সন্দ্বীপ অধিকার আন্দোলন
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘অদম্য একুশ ‘র আনুষ্ঠানিক যাত্রা ও ঈদ পুনর্মিলনী

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সাংবাদিকের দায়

গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলা বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোঃ আলমগীর হোসেন আমাদের প্রতিনিধির একন্ত সাক্ষাৎকারে বলেন : জাতিসংঘের ১৯৪৮ সালের মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে: “প্রত্যেকের মতামত ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার রয়েছে; এই অধিকারে হস্তক্ষেপ ছাড়াই মতামত রাখা, এবং কোনও গণমাধ্যমের মাধ্যমে তথ্য ও ধারণাগুলি অনুসন্ধান করা, গ্রহণ এবং গ্রহণের স্বাধীনতার সীমানা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত”। বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দান করা হয়েছে কিন্তু তার খুব একটা কার্যকারিতা বর্তমানে নেই। অমর্ত্য সেন বলেছেন, ‘সংবাদমাধ্যমের লাগাম টানার ফলে যেসব তথ্য সুপ্ত হয়ে যায়, তা একনায়কতান্ত্রিক সরকারকেই ভুল পথে চালিত করে। এটা অবশ্যই সত্য যে সংবাদমাধ্যমের ওপর বিধিনিষেধ কেবল নাগরিকদেরই অন্ধকারে রাখে না, সরকারের কাছেও অতি জরুরি তথ্য পৌঁছাতে দেয় না।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা গণতন্ত্রের একটি স্তম্ভ। এই স্তম্ভকে যতো মজবুত করা যাবে দেশ পরিচালনা ততই স্বচ্ছ হবে। গণতন্ত্র আর প্রশ্নবিদ্ধ হবে না। পাশাপাশি  গণমাধ্যমের সমন্বয়হীনতা দূর করা জরুরি। মত প্রকাশের স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারলেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।   সংবাদমাধ্যমের শক্তির মূল বিষয় হচ্ছে সংবাদ প্রকাশে সত্যনিষ্ঠ থাকা এবং ভারসাম্য রাখা। তারপরও কেউ যদি সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগ বা আইনের অপপ্রয়োগ করে, তাতে সামাজিক শক্তি সংবাদমাধ্যমের পাশে দাঁড়ায়। কিন্তু সংবাদমাধ্যম যদি ব্যক্তিস্বার্থে চালিত হয়, তাহলে শেষ পর্যন্ত রক্ষা হয় না। সংবাদমাধ্যম কিংবা সংবাদমাধ্যমের কারণে সংক্ষুব্ধ পক্ষ- কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। একটি দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় প্রত্যেককে আইনের সীমারেখার মধ্যে থেকে দায়িত্ব পালন করতে হয়। তিনি সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, আমলা, আইনজীবী- যেই হোন। দেশের গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা অপিরহার্য। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় সরকারের ভুলত্রুটি যেমন সংবাদপত্রে তুলে ধরা দরকার; তেমনি সরকারের ভালো কাজের প্রশংসা করে সংবাদ, সম্পাদকীয় নিবন্ধ প্রকাশ হওয়া দরকার। কিন্তু অনেক সময় কোনো কোনো সংবাদপত্র, সংবাদমাধ্যম সরকারের ভালো কাজের প্রশংসার পরিবর্তে পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা, বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ, সম্পাদকীয় নিবন্ধ প্রকাশ করে।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় সাংবাদিক, সংবাদপত্রগুলোর জবাবদিহি, স্বচ্ছতা, বন্তুনিষ্ঠতা নিজেদেরই নিশ্চত করতে হবে। একই সঙ্গে একজন সাংবাদিক ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা কোনো দলের পক্ষে উদ্দেশ্যমূলক, মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থেকে স্বাধীন, সঠিক সাংবাদিকতাকে অনেকদূর এগিয়ে নিতে পারে। কারণ স্বাধীন সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চত করতে হলে একই সঙ্গে সাংবাদিক, সংবাদত্রের মালিক, সম্পাদক, সাংবাদিক সংগঠনগুলো, সুশীল সমাজের প্রতিনিধির দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে। পাশাপাশি সরকার, সরকারের প্রশাসনকেও সহায়ক ভূমিকা নিতে হবে। তাহলেই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। বর্তমানে দেশে বিশেষকরে মফস্বল এলাকায় যে সকল সাংবাদিকরা রয়েছেন তাদের অনেকেরই সাংবাদিকতার বিষয়ে সঠিক জ্ঞান নাই। শুধু মাত্র টাকার বিনিময়ে একটি কার্ড নিয়ে অধিকাংশ সাংবাদিকেরা রাজনৈতিক দলের ছায়াতলে থেকে দলীয় বিভিন্ন সিন্ডিকেটের অংশ হয়ে কাজ করে। যার মধ্যে রয়েছে এলাকার জমির দালালী, চাঁদাবাজি, থানার দালালী, যে কোন অযুহাতে মানুষকে হয়রানি ইত্যাদি। এসব সাংবাদিকদের অধিকাংশের শিক্ষাগত যোগ্যতাও তেমন নেই। নামে মাত্র সংবাদপত্র এবং অনলাইন পোর্টালগুলো টাকার বিনিময়ে এসব কার্ড বিক্রি করে থাকে।  অধিকাংশ সংবাদপত্র বা অনলাইন পোর্টালের আবার কোন নিবন্ধনও নাই ফলে চা বিক্রেতা, রেন্ট কার ব্যাবসায়ী, দোকানদার, রাজনৈতিক কর্মীরা সহজেই সাংবাদিক নামক একটি মহান পেশার সাথে যুক্ত হয়ে এই পেশাকে কলুষিত করছেন। সাংবাদিকতাকে যেকোন মূল্যে প্রশ্নের ঊর্ধ্বে রেখে কাজ করতে হবে। টাকার বিনিময়ে কার্ড বানিজ্য বন্ধ করতে হবে। নামে বেনামে অনিবন্ধিত পোর্টাল বন্ধ করতে হবে। যে কেউ চাইলেই যেন কোন সংবাদপত্র বা অনলাইন পোর্টালের নিবন্ধন নিতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। সাংবাদিকদের কোন দলের দালালী করা থেকে বিরত থাকতে হবে । জমির দালালী, চাঁদাবাজি, থানার দালালী, যে কোন অযুহাতে মানুষকে হয়রানি যেন করতে না পারে। সাংবাদিকতা পেশার উদ্দেশ্য একজন সাংবাদিককে অনুধাবন করতে হবে এবং তা পালন করতে হবে। তাহলেই একজন সাংবাদিক সমাজ এবং দেশকে ভাল কিছু দিতে পারবে। পাশাপাশি রাষ্ট্রকেও গণমাধ্যমকে তার কাজের স্বাধীনতা দিতে হবে আর এভাবেই এগিয়ে যাবে আগামীর বাংলাদেশ।

আলমগীর হোসেন।

সভাপতি – বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব কালীগঞ্জ উপজেলা, গাজীপুর।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

ফেসবুক পেজ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০  
error: protected !!

Copyright© 2025 All reserved