ঢাকা, সোমবার, ১৯ মে, ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২, ২০ জিলকদ, ১৪৪৬
সর্বশেষ
মানবসেবা সংগঠন উদ্যোগে হালিশহরে শরবত বিতরণ
চট্টগ্রামে পাহাড়ধস এর প্রেক্ষিতে ট্রিগার থেশহোল্ড বিষয়ক বৈধকরণ সভা অনুষ্ঠিত
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্ববৃহৎ (৫ম) সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল
স্বতন্ত্র কণ্ঠস্বরগুলো এক কন্ঠস্বরে রূপান্তর হলে অপারেজেয় শক্তির অভ্যুদয় ঘটে
চট্টগ্রামে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের আড়ম্বরপূর্ণ শান্তি শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত
৯৪ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে মা দিবস ও অভিভাবক সমাবেশ
নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি আকর্ষণ এবং অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইটা কঠিন
সীতাকুণ্ডে প্রকৌশলীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী হামলা 
শ্রীশ্রী মা মগধেশ্বরী জাগ্রত মন্দিরের ২১তম বার্ষিকী
“আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণের যৌক্তিকতা: বিশ্লেষণমূলক দৃষ্টিভঙ্গি”

ভালো থেকো লক্ষীছড়ি

ভালো থেকো লক্ষীছড়ি ভালো থেকো।
এই জনপদ, ঝরনার হ্রদ ভালো থেকো
ভালো থেকো প্রতিটি মানুষ ভালো থেকো।
ভালো থেকো প্রকৃতি ও নীলাকাশ ভালো থেকো,
ভালো থেকো তরুছায়া মিষ্টি বাতাস ভালো থেকো।
ভালো থেকো প্রিয় সতীর্থরা ভালো থেকো।
ভালো থেকো পাহাড়ী বাঙ্গালী ভালো থেকো।
ভালো থেকো অফিস আদালত ভালো থেকো।
ভালো থেকো শিক্ষা-ভচিকিৎসা প্রতিষ্ঠান ভালো থেকো
ভালো থেকো মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা ভালো থেকো।
ভালো থেকো প্রেসক্লাব, শিল্পকলা ভালো থেকো।
ভালো থেকো চিৎজুড়ানি লেক ভালো থেকো।
ভালো থেকো শিলাছড়ি প্রাকৃতিক সুড়ঙ্গ ভালো থেকো।

অবশেষে মনে রেখো আমায় যদি দূরে যায় চলে
তোমাদের প্রার্থণায় রেখো-আমাকে যেয়োনা ভুলে।
অবশেষে পাহাড়ী জনপদে সাড়ে চার বছরের জার্নি শেষ হলো।সেই সাথে তিন দশকের পেশাগত জীবনের গল্পেরও পরিসমাপ্তি টানা হলো।
লক্ষীছড়ি -সুন্দর, শান্ত, নির্জন একটা শান্তির জনপদ।ছবির মতো সাজানো– গোছানো নিরবিলি এক জনপদ। এখানকার পাহাড়ি মানুষের সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধি ও বৈচিত্র্য মুগ্ধকর।
এ অঞ্চলটি ভৌগোলিক কারণে সমতল ভূমি থেকে ভিন্ন প্রকৃতির। বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চল, উঁচু-নিচু আঁকাবাঁকা সর্পিল আকৃতির যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে সঠিক সময়ে অবকাঠামো উন্নয়ন করা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। তবে বিগত কয়েকবছরে অবকাঠামো উন্নয়ন ছিল চোখে পড়ার মতো। শিক্ষাবিস্তার হয়েছে, স্বাস্থ্যঝুঁকি কমেছে, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে মহিলাদের অংশগ্রহণ বেড়েছে,বিদ্যুতায়নের কারণে অনেক এলাকা আলোকিত হয়েছে, তথ্যপ্রবাহ ও যোগাযোগ বেড়েছে, সামাজিক সুবিধা বেড়েছে, ক্রীড়া ও সংস্কৃতির উন্নতি হয়েছে, মা ও শিশু কল্যাণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং দাপ্তরিক কাজে সামর্থ্য বেড়েছে। সর্বোপরি এলাকার মানুষের মনে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। সম্পদ সমৃদ্ধ পার্বত্য চট্টগ্রামের এই জনপদ – অত্যন্ত তাৎপর্যময় ভৌগলিক অবস্থান জুড়ে দাঁড়িয়ে আছে। এই জনপদকে দেশব্যাপী নতূন মাত্রায় পরিচিত করলেন সাফ ফুটবল জয়ী ‘ম্যাজিকেল চাকমা’ খ্যাত মনিকা চাকমা। সবচেয়ে দু:খজনক হচ্ছে- জাতীয় নারী ফুটবল দলের তারকা খেলোয়াড় মনিকা চাকমার গ্রামের বাড়ী খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষীছড়ি উপজেলার দুর্গম সুমন্ত পাড়া গ্রামে। যে গ্রাম থেকে মনিকা জোড়া শিরোপা জয়ে বাংলাদেশেকে বিশ্ব দরবারে পরিচিত করালেও ভাগ্য বদল হয়নি মনিকাদের। প্রতিবারই প্রতিশ্রুতির বন্যায় ভাসলেও মনিকার এলাকার মানুষের কোনো পরিবর্তন হয়নি। মনিকার চাকমার গ্রামে যেতে হলে দুর্গম কাচা রাস্তা ও সাঁকো পার হয়ে যেতে হয়। বিশেষ করে বর্ষাকালে অনেক কষ্টে যেতে হয়। নেই কোনো সুপেয় পানির ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের আন্তরিকতা থাকা সত্ত্বেও দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট ছিনিয়ে আনা সাফ চ্যাম্পিয়ান স্বর্ণকন্যার গ্রামের মানুষের স্বপ্ন অপূর্ণয় থেকে গেলো। এই অপূর্ণতার কারণে আমারও অতৃপ্তি থেকে গেলো।
এখনও কিছু সমস্যা দৃশ্যমান – তন্মেধ্যে অন্যতম হলো পর্যাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই,খেলার মাঠ নেই, গার্লস স্কুল নেই,পাহাড়ি ছড়ায় এখন পানির প্রবাহ দেখা যায় না।
এই এলাকার যুবকদের দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করতে নার্সিং, মোবাইল সার্ভিসিং, হোটেল ম্যানেজমেন্ট, ট্যুরিস্ট গাইড ম্যানেজমেন্ট, ড্রাইভিং ও মেরামতসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রদান কাজে সহযোগিতা করার জন্য উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর সহযোগিতা থাকলে লক্ষীছড়ির মানুষের জীবন মানের অনেক উন্নতি হতো।
উপজেলা পর্যায়ে একটা আবাসিক হোটেল নির্মাণ হলে ব্যবসায়ী ও পর্যটকদের আসা যাওয়া বাড়তো, বিনিয়োগ বাড়তো,চাষীরা অর্থকরি ফসলের মূল্য পেতো।
লক্ষীছড়ির মানুষের ভালোবাসা, গভীর অন্তর্দৃষ্টি, সহৃদয় বিবেচনা, অপার করুণাঘন প্রেম আর মৈত্রী দিয়ে আমাকে যে সন্মান দেখিয়েছে তা আমার জীবনে অবিস্মৃত স্মৃতি হয়ে থাকবে।
এখানকার বেশীরভাগ মানুষ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী।বুদ্ধ তাঁর প্রদর্শিত পথ এবং মুখনিঃসৃত বাণীর মধ্যে সবার প্রতি অহিংসা পোষণ, মৈত্রী লালন, সব জীবের সুখ-শান্তি কামনা ও দয়া প্রদর্শনের বিষয়কে প্রাধান্য দিয়েছেন। মানুষকে মধ্যম পন্থা অবলম্বন করতে পরামর্শ দিয়েছেন।বৌদ্ধ ধর্ম একটি অহিংস, উদার এবং সর্বজীবে দয়া প্রদর্শনকারী ধর্মমত বা দর্শন। শুধু যারা তাঁর মত ও পথের অনুসারী তাদের জন্য নয়; বরং জাতি- ধর্ম, বর্ণ-গোত্র, স্থান- কাল- পাত্র নির্বিশেষে পৃথিবীর সব মানুষের জন্য তারা আন্তরিক।
জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক; সকলের মধ্যে অহিংসা বিরাজ করুক এটাই বৌদ্ধ ধর্মের মূলমন্ত্র।

আমি লক্ষীছড়িতে যোগদান করেছি ২০/১২/২০২০ খ্রীষ্টাব্দে, প্রায় সাড়ে চার বছর হতে চলেছে।
প্রথদিকে কাজ করতে গিয়ে আমাকে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। আমি বরাবরই কাজের প্রতি দায়বদ্ধ ছিলাম, এবং কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে প্রতিটি চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হয়েছে।
তার উপর অফিস শেষে পড়ন্ত বিকেলে জনমানবশূণ্য নি:সঙ্গ পরিবেশে প্রথম প্রথম খুব খারাপ লাগতো। এখানে এই দুর্গম পাহাড়ী অঞ্চলে মাঝে মধ্যে হাহাকারে ভরে ওঠতো বুক। রাতে অসুস্থ হলে আশে পাশে কাউকে পাওয়া যেতোনা, সহকর্মী, আত্মীয়, স্বজন, প্রতিবেশী, কেউ নয়। এরমধ্যে দুইবার ভয়াভহ করোনায় আক্রান্ত হই।
সেই মুহুর্তে পরিচিত, প্রিয় মুখগুলো স্বচোখে দেখার তৃষ্ণায় ক্রমশ শুকিয়ে উঠতো মন। ভাবতাম, কত দিন চলবে এই অবরুদ্ধ জীবন। বারান্দার গ্রিল ধরে অসহায় তাকিয়ে দেখতাম মুক্ত প্রকৃতি, পাখির বাধাহীন ওড়াউড়ি। আর আমি কেবল দীর্ঘশ্বাস ফেলতাম।ধীরে ধীরে এই পাহাড়,মাটি ও মানুষদের ভালো লেগে যায়। ভালো লেগে যায় বিভিন্ন বিভাগের সহকর্মীদের।
এমনিতেই আমি একটু আবেগী মানুষ, আমাকে পাহাড় সমুদ্র টানে, জোছনা টানে, বাউল গানের জলসা টানে, ধর্মও টানে, মানুষের ভালোবাসা টানে, কিন্তু পার্থিব জগতের লোভ লালসা অতোটা টানেনি। যতোটা টেনেছে লক্ষীছড়ির প্রিয় সতীর্থ, মাটি ও মানুষ।কখনো ভুলবোনা, বৃষ্টি, কাদা, ধুলিমাখা স্মৃতির পাহাড়ি এই প্রান্তিক শহরকে।
বলতে দ্বিধা নেই- লক্ষীছড়ির প্রতিটি কর্মকর্তা কর্মচারী, প্রতিটি মানুষ ছিল অসামান্য হৃদয়বান,
আন্তরিক ও সজ্জন মানুষ। আমি সবার কাছেই ভালোবাসা ও সন্মান পেয়েছি। আমার প্রিয় সতীর্থদের বাইরেও স্থানীয় কয়েকজন মানুষের ভালোবাসাও আমাকে উদ্বেলিত করেছে। বিশেষ করে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বাবুল চৌধুরী, উপজেলা চেয়ারম্যান সুপার জ্যোতি চাকমা, তিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানবৃন্দ, প্রেসক্লাব সভাপতি মোবারক হোসেন বিভিন্ন রাজনৈতিক নেত্রীবৃন্দ,
রূপালী দিদিসহ বেশ ক’জন শুদ্ধতম শুভার্থী।প্রত্যেকেই উদার, মানবিক, সামাজিক,বন্ধু বৎসল ও সজ্জন মানুষ।তাঁদের ভালোবাসার প্লাবনে আমি সত্যি আপ্লুত,সমৃদ্ধ। লক্ষীছড়িতে সাড়ে চার বছরের জার্নিতে মানুষের জন্য কতোটা কাজ করতে পেরেছি জানিনা,তবে নিষ্ঠা, আন্তরিকতার সাথে প্রজাতন্ত্রের একজন সেবক হিসেবে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করেছি। নিজ অবস্থানে জ্ঞানত বা ইচ্ছাকৃতভাবে কারো সামান্যতম ক্ষতির কারণ যাতে না হই সে বিষয়ে সচেষ্ট থেকেছি।
লক্ষীছড়িকে ছেড়ে যেতে আমার খারাপ লাগবে।সাড়ে চার বছরের স্মৃতি, চেনা মুখ কেবল কম নয়।
কত স্মৃতি, কত প্রিয় মুখকে ছেড়ে দীর্ঘ এক অধ্যয়ের সমাপ্তি টানা অনেক কষ্টের অনুভূতি।টুকরো টুকরো এতো যে ঘটনা, আজকে সবই স্মৃতি! সাড়ে চার বছরের সম্পর্কের ছেদ সহকর্মীদের ছেড়ে যাওয়া তো কষ্টেরই হবে।
আমি মনে করি আমি সবাইকে ভালোবাসি।ভালোবাসার জন্য যে সতেজ প্রশান্ত মন, অনুভূতি প্রয়োজন সেটা আমার আছে।
সহকর্মীদের স্বভাবসুলভ ভঙ্গিমায় কুশল বিনিময় করার চিরচেনা রূপ,আনন্দ-বেদনার আলোকচ্ছ্বটা কোনোটাই ভুলা যাবেনা। সত্যি বলতে কি, কিছু মানুষের ভালোবাসা আমাকে ভিষণভাবে নাড়িয়ে দেয়,দাগ কাটে মনে চিরস্থায়ীভাবে,হৃদয়ের গভীরে পাথরে অংকিত হয়ে থাকবে তাদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা,ভালোবাসা, সন্মান ও দোয়া।
প্রত্যেকের ভালোবাসার ছোঁয়ায় স্নাত হয়েছি প্রতিদিন, প্রতি মূহূর্ত। কোমল স্নেহ, স্নিগ্ধ ভালোবাসা আর পরম মমতায় ঘেরা ছিল আমার চারদিক।
প্রথম প্রথম একটু খারাপ লাগলেও জীবনের নির্মল আনন্দ- উল্লাস, বন্ধুবাৎসল্য, মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা-ভালোবাসা, সম্প্রীতি,প্রেম, স্নেহ-মমতা, গুরুজনদের আশীর্বাদ সবই পেয়েছি আমি।

লক্ষীছড়ির মানুষের ভালোবাসায় আমি আপ্লুত, লক্ষীছড়ির কথা আমার আজীবন মনে থাকবে।যেখানেই থাকি লক্ষীছড়ির প্রতিটি মানুষ আমার ভালোবাসা ও প্রার্থণায় থাকবেন।
আমিও দোয়া চাই, আমার বাকী জীবনটা যেনো অবসাদে পরিণত না হয়, অবসরকে আমি যেনো দূর্লভ আনন্দে পরিণত করতে পারি। আমি যেনো আমার বাকী জীবনটা – সুন্দরভাবে যাপন করতে পারি।
সৌন্দর্য সম্ভোগের মানসিকতা নিয়ে হৃদয়ে যুবক থাকতে পারি,চেতনায় সদয় হতে পারি, এবং অবসর জীবনকে উপভোগ করতে পারি।খারাপ স্মৃতিগুলোকে ভুলে গিয়ে ভালো স্মৃতিগুলো নিয়ে থাকতে পারি।
পরিশেষে বলবো -আমার দাফতরিক কিংবা ব্যক্তিগত আচরণে কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে আমাকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবার বিনীত অনুরোধ করছি।
Please forgive not forgot,আমাদের ক্ষমা করে দিবেন কিন্তু ভুলে যাবেন না,কারণ forgiveness is a Valuable Gift A prayer of forgiveness is something we all seek at some point in life. Forgiveness is a valuable gift that is neither easily obtained, nor easily given. Forgiveness is essential for life; it frees us from past wrongs and gives us hope for the future.
আপনাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক, আপনাদের জীবন সুন্দর হোক, কল্যানময় হোক,সার্থক হোক,অনাবিল সুখ শান্তিতে সমৃদ্ধ হোক,আপনারা সবাই ও আপনাদের পরিবারের সকলে সুস্থ থাকুন।
সুস্থ জীবনধারার বিশুদ্ধ বাতাস বইতে থাকুক আজীবন এই জনপদে সেটাই প্রত্যাশা করি।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

ফেসবুক পেজ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭৩০
৩১  
error: protected !!

Copyright© 2025 All reserved