ঢাকা, সোমবার, ১৯ মে, ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২, ২০ জিলকদ, ১৪৪৬
সর্বশেষ
মানবসেবা সংগঠন উদ্যোগে হালিশহরে শরবত বিতরণ
চট্টগ্রামে পাহাড়ধস এর প্রেক্ষিতে ট্রিগার থেশহোল্ড বিষয়ক বৈধকরণ সভা অনুষ্ঠিত
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্ববৃহৎ (৫ম) সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল
স্বতন্ত্র কণ্ঠস্বরগুলো এক কন্ঠস্বরে রূপান্তর হলে অপারেজেয় শক্তির অভ্যুদয় ঘটে
চট্টগ্রামে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের আড়ম্বরপূর্ণ শান্তি শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত
৯৪ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে মা দিবস ও অভিভাবক সমাবেশ
নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি আকর্ষণ এবং অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইটা কঠিন
সীতাকুণ্ডে প্রকৌশলীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী হামলা 
শ্রীশ্রী মা মগধেশ্বরী জাগ্রত মন্দিরের ২১তম বার্ষিকী
“আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণের যৌক্তিকতা: বিশ্লেষণমূলক দৃষ্টিভঙ্গি”

স্বতন্ত্র কণ্ঠস্বরগুলো এক কন্ঠস্বরে রূপান্তর হলে অপারেজেয় শক্তির অভ্যুদয় ঘটে

কার্নেইল কথা দিয়েই শুরু করছি- “একটা সময় প্রচন্ড ঘৃণা হৃদয়ে ধূমায়িত হয়। তারপর ধিকিধিকি জ্বলে এবং এক সময় দাউ দাউ করে জ্বলে উঠে। ”
আমরা বিপক্ষ মতকে একেবারেই সহ্য করতে পারি না। আমাদের প্রত্যেকের নিজস্ব আদর্শ, মূল্যবোধ, নৈতিকতার জায়গা থাকে এবং আমরা সবসময় সেগুলোকেই আঁকড়ে ধরে রাখতে চাই। এই যে আদর্শ, মূল্যবোধ, নৈতিকতার জায়গা, সে নৈতিক অবস্থান থেকে কথা বলার যে অধিকার সেটাই আমার মৌলিক অধিকার। এ অধিকার আমাকে সংবিধান দিয়েছে।
বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ নং অনুচ্ছেদ অনুসারে বাংলাদেশের নাগরিকদের চিন্তা, বিবেক ও বাকস্বাধীনতার নিশ্চয়তা দিয়েছে। প্রত্যেক নাগরিকের বাক ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতার পাশাপাশি সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিয়েছে।
কোনো প্রজ্ঞাপন বা পরিপত্র দিয়ে মৌলিক অধিকার হরণ করা যায়না কিংবা সংবিধানের কোনো অনুচ্ছেদও বাতিল করা যায়না।
এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমার/আপনার সকলের মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে।সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদ সে ক্ষমতা আমাদের দিয়েছে।
এছাড়াও ৩২ নং অনুচ্ছেদ বলা হয়েছে , “আইনানুযায়ী ব্যতীত জীবন ও ব্যক্তি-স্বাধীনতা হইতে কোন ব্যক্তিকে বঞ্চিত করা যাইবে না।”
সকল ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সংবিধান শক্ত অবস্থানে রয়েছে সংবিধানের ২৭, ২৮ ও ৩১ অনুচ্ছেদে আইনের দৃষ্টিতে সমতা, সকলের সমঅধিকার ও আইনের আশ্রয়লাভের অধিকারের বিষয়ে উল্লেখ আছে।
সকলকে মৌলিক মানবাধিকারের স্বীকৃতি দিতে হবে, সমান অধিকারকে সমুন্নত রাখতে হবে। আইনের সমান সুরক্ষার নিশ্চয়তা দিতে হবে।
এমন যদি হয় যে, কোনো বিশেষ জনগোষ্ঠি সরকারের নাকের ডগায় রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করলো (যেমন NCP+), আবার কোনো সুন্নী মুসলমান তাদের কর্মীর হত্যার প্রতিবাদ সমাবেশ করার অনুমতিও পেলোনা সেটা ষ্পষ্টতই সংবিধান লঙ্ঘন।
সম্প্রতি -ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলেছে, ভিন্নমত ও দাবি আদায়ের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন অপরাধ নয়, সাংবিধানিক অধিকার।
আওয়ামীলীগ এর নিষেধাজ্ঞার গেজেটটি দেখলাম।
আমার প্রশ্ন হচ্ছে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কি মানুষের অনুভূতি ও ভালোবাসার মধ্যে সীমারেখা টানা যায়? তাহলেতো আঠারো কোটি মানুষের ৩৫% হিসেব করলেও ৬ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষকেই জেলে থাকতে হবে! মতান্তরে আরও বেশী।
কারাগারে এতো মানুষের জায়গা হবেতো? এতো মানুষের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা কি করা যাবে? যা দিনকাল পড়ছে সরকারিভাবে ফ্রী খাওয়ার জন্যও অনেকে স্বেচ্ছায় কারাবরন করবে।
গেজেটটিও পড়লাম।আজ আবার (১২ মে/২০২৫) নির্বাচন কমিশনেরও প্রজ্ঞাপন দেখলাম -আওয়ামীলীগ এর নিবন্ধন স্থগিত করা হয়েছে।এই স্থগিতাদেশ নির্বাচন কমিশন এর কোন ধারার ক্ষমতা বলে করা হয়েছে সেটাও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ নেই।
২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮ নং অনুচ্ছেদেও স্থগিতাদেশ এর বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা আমার চোখে পড়েনি।বিজ্ঞ আইনজিবীরা হয়তো এ বিষয়ে আরও ভালো ব্যাখ্যা দিতে পারবেন।

আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে গেজেটটি প্রশ্নবিদ্ধ মনে হয়েছে। ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮ নং অনুচ্ছেদটিও পড়লাম।
১৮ অনুচ্ছেদে বলা আছে সংগঠন বাতিলের কথা কিন্তু সংগঠনের কার্যক্রম বাতিলের কথা কোথাও নেই।
৯ ধারায়ও বলা আছে নিষিদ্ধ সংগঠনকে সমর্থন করলে অপরাধ সংগঠিত হবে,কার্যক্রমকে নয়।তবে হ্যাঁ, সংগঠন বন্ধ হলে তখন হয়তো কার্যক্রমের বিষয়টিও সামনে এসে যাবে।
সংগঠন বাতিল ও কার্যক্রম স্থগিতের মধ্যে
সুক্ষ্ম ও স্থুল কিছু পার্থক্য আছে ।
সুতারাং এই বিষয়ে আরও ষ্পষ্টিকরণের প্রয়োজন রয়েছে।
সংগঠন বন্ধ হলেই কেবল ১৯ ধারায় রিভিউ এর ব্যবস্থা আছে।যেহেতু সংগঠন বন্ধ হয়নি সেহেতু রিভিউ এর প্রসঙ্গটিও এ ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
গেজেটে প্রচার প্রচারণা বন্ধ করার কথা থাকলেও সেক্ষেত্রে ২০ ধারা উল্লেখ করা প্রয়োজন ছিল।সেই ধারাটিও উল্লেখ করতে পারেনি কারণ সেটা সংগঠন বন্ধের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।কেননা ২০ ধারায় বলা হয়েছে বন্ধ হওয়া সংগঠনের সমর্থণে প্রচার প্রচারণা চালানো যাবেনা।
যেহেতু ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮ নং অনুচ্ছেদটি কেবল সংগঠন বন্ধের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য এবং সংগঠন বন্ধের প্রক্রিয়াও দীর্ঘ, এতে রিভিউ,আপীল এর বিষয়টিও সংশ্লিষ্ট সেহেতু এই পরিপত্রটি নিয়ে কেউ চ্যালেঞ্জ করলে উচ্চ আদালতে টিকবে কিনা এ ব্যাপারে আমি সন্দিহান। এ বিষয়ের সিনিয়র আইনজিবীরা আরও ভালো বলতে পারবেন।
২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনটি যাতে সংবিধানের ৩৯ নং ধারার সাথে যাতে সাংঘর্ষিক না হয় সেজন্য ২০০৯ সালের ১৮ নং ধারাতে সংগঠনের কথা বলা হয়েছে,ব্যক্তির মৌলিক অধিকার হরণ এর কথা বলা হয়নি।
তাই এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে কোনো প্রজ্ঞাপন/ পরিপত্র /গেজেট দ্ধারা আমার মৌলিক অধিকার বা বাক স্বাধীনতা রুদ্ধ করতে গেলে সেটা সংবিধানের ৩৯ নং ধারার সাথে ষ্পষ্টতই সাংঘর্ষিক হবে।এবং উচ্চ আদালতের শরনাপন্ন হলে সেটা বাতিলযোগ্য হবে।যেহেতু সংবিধান প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন, সেহেতু প্রজ্ঞাপন /পরিপত্র দিয়ে বা কোনো নির্বাহী আদেশ দিয়ে সংবিধানের সাথে অসামাঞ্জস্য কিছু করা যায়না।করলেও সেটা বাতিল হবে।সে বিষটিও আমি নিম্নে ষ্পষ্ট করছি।

# সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭(২) এ বলা হয়েছে-সংবিধান প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন। অন্য কোন আইন যদি সংবিধানের সাথে অসামঞ্জস্য হয়,তাহলে যতটুকু অসামঞ্জস্য হবে ততটুকু বাতিল বলে পরিগনিত হবে।তার মানে এখানে সংবিধানের Supremacy of the Constitution Theory প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

# এখানে আরো কিছু কথা বলে রাখা প্রয়োজন।সংবিধানের সাথে অন্য কোন আইন conflict করেছে কিনা সেটা দেখবেন সুপ্রীম কোর্ট। তাই সুপ্রীম কোর্ট-কে সংবিধানের অভিভাবকও বলা হয়ে থাকে। সুপ্রীম কোর্টের এই ক্ষমতাকে Judicial Review ও বলা হয়ে থাকে।Judicial Review ধারনাটা সর্বপ্রথম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মারবারি vs মেডিসন(১৮০৩) মামলায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো।

# সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭(২)-তে বলা হয়েছে, সংবিধান প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন। অন্য কোন আইন সংবিধানের সাথে যতটুকু conflict করবে ততটুকু বাতিল বলে গণ্য হবে। এটাকে সংবিধানের ভাষায় Doctrine of Severability বলা হয়ে থাকে।

প্রাসঙ্গিক ভাবে এখানে আরও কয়েকটি বিষয় ষ্পষ্ট করছি।আইনের শিক্ষার্থী হিসেবে আমার মনে হয়েছে –
আমরা অনেকেই আইন,বিধি,প্রবিধি, প্রবিধান, অধ্যাদেশ, আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন,পরিপত্র ইত্যাদি শব্দের সাথে পরিচিত।কিন্তু সঠিকভাবে বুঝতে পারিনা কিংবা ব্যাখ্যা করতে পারিনা যে কোনটা আসলে কি? আমার মনে হয় পেশাগত প্রয়োজনে এই বিষয়গুলো সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকা দরকার। তার মানে এই নয় যে,আমি বন্ধুদের জ্ঞান দিচ্ছি। আমার মনে হয়েছে মাঝে মধ্যে আইনী বিষয় ও বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনা হলে আমাদের জানার জগত সমৃদ্ধ হবে, সেজন্যই শেয়ার করলাম।
নিম্নে আইন,বিধি,প্রবিধি, প্রবিধান, অধ্যাদেশ, আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন,পরিপত্র ইত্যাদি বিষয়ে সংক্ষেপে ধারনা দেয়া হলো।
আইন :
আইন হলো দীর্ঘ দিন ধরে প্রচলিত এমন কিছু প্রথা, রীতি নীতি ও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রনীত এমন কিছু নিয়ম-কানুন যা একটি রাষ্ট্র বা গোষ্ঠী নিজেদের উপর বাধ্যগত বা অবশ্য পালণীয় বলে স্বীকার করে।

বাংলাদেশের সংবিধানের ১৫২ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- “আইন” অর্থ কোন আইন, অধ্যাদেশ, আদেশ, বিধি, প্রবিধান, উপ-আইন, বিজ্ঞপ্তি ও অন্যান্য আইনগত দলিল এবং বাংলাদেশে আইনের ক্ষমতাসম্পন্ন যে কোন প্রথা বা রীতি।
বিধি শব্দের অর্থ নিয়ম।
(বিঃদ্রঃ “প্রবিধি” বিধি এর সমার্থক শব্দ)

প্রজ্ঞাপনঃ আদেশ, নিষেধ, নিয়ম নীতি সংক্রান্ত তথ্য, পান্ডুলিপি বা বইকে প্রজ্ঞাপন/নীতিমালা/পরিপত্র বলে।
আইন ও বিধির পার্থক্য :
বিধি এবং আইনের মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য নেই। তবে আইন শব্দটি ব্যাপক এবং বিধি শব্দটি কিছুটা নির্দিষ্ট। যেমন, আইনত শব্দটি বৈধ, অবৈধ উভয় ব্যাপারেই ব্যবহার করা হয়। কিন্তু বিধিসম্মত শব্দটি শুধু বৈধ বিষয়ের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া আইনের সবগুলো বিষয়কে একত্রে আইন বলা যায়। কিন্তু বিধি বলা হয় আইনের প্রতিটি ধারা উপধারাকে!আইন প্রণয়ন ক্ষমতা- জাতীয় সংসদের।

অধ্যাদেশ:
রাষ্ট্রপতি নিজে যে আইন জারি করে তাকে অধ্যাদেশ বলে।ইংরেজিতে একে ordinance বলে।
সাধারণত যখন সংসদ অকার্যকর থাকে অথবা যখন সংসদের অধিবেশন বন্ধ থাকে তখন রাষ্ট্রের জরুরী প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতি নিজের একক ক্ষমতাবলে যে আইন জারী করে তাকে অধ্যাদেশ বলে ।
এসম্পর্কে সংবিধানের ৯৩ ধারায় বিস্তারিত আলোচনা করেছে ।
বিধি(Rule) ও প্রবিধি (Regulation) এর মধ্যে difference কোথায়? এগুলো কে প্রনয়ণ করে থাকেন?
কোন আইনকে পরিপূর্ণতা দেয়ার জন্য প্রণয়ন করা হয় Rules যেমনঃ দুর্নীতি করলে শাস্তি হবে। এটা হচ্ছে Act বা আইনের কথা। কিন্তু কিভাবে হবে তা বলা নাই।এসব বলা আছে বিধিতে। সরকারের সাথে আলোচনা করে রুলগুলো মন্ত্রিপরিষদ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় কিংবা সুপ্রিম কোর্ট প্রনয়ণ করেন। সংসদ /সরকার এই ক্ষমতা দেয়।
অনুচ্ছেদ ৬৫ অনুসারে পার্লামেন্ট নির্দিষ্ট কোন কর্তৃপক্ষকে তাদের প্রতিষ্ঠানের কার্যাবলী পরিচালনার জন্য বা আইন তৈরির যে ক্ষমতা দেয়া হয় তাই regulation যেমন-PRB,1943। অথচ police Act,1861 তৈরি করা হয়েছে পার্লামেন্টে কিন্তু PRB তৈরি করেছে পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাই।

প্রবিধান Regulation বলতে কি বোঝায়?

শাব্দিক অর্থে Regulation বলিতে কোন কাজ নিয়ন্ত্রণ করা, পরিচালনা করা বুঝায়। ইহা আইনের পুরনো নাম। আইনগত অর্থে প্রবিধান বলিতে সাংবিধানিক দলিলাদির অধীনে ক্ষমতাপ্রাপ্ত যে কোন ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রণীত বিধান বুঝায়।

আইনের অধীনে প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষেত্রে আইনের বিধান কার্যকরকরণের পদ্ধতি ও নিয়মাবলী বর্ণিত থাকে। ইহাছাড়া যে সকল বিষয়ে প্রবিধান প্রণয়ের নির্দেশনা আইনে থাকে ঐ সকল বিষয়ও প্রবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

আইন ও অধ্যাদেশের মধ্যে পার্থক্য:
আইন- সংসদে বিল আকারে যে প্রস্তাব পাশ হয় তা-ই হল আইন।
অধ্যাদেশ- দেশে যখন কোন জরুরি অবস্থা চলতে থাকে এবং আইন পাশ করার দরকার পড়ে কিন্তু সংসদের কোনো অধিবেশন থাকে না। তখন প্রেসিডেন্টের মুখ নি:সৃত বাণীকেই অধ্যাদেশ বলে।
কিন্তু পরবর্তী সংসদ অধিবেশন শুরু হবার ৩০ দিনের মধ্যে অধ্যাদেশকে আইনে রূপান্তর করতে হয় নতুবা তা বাতিল হয়ে যায়।

পরিপত্র কী:
রাষ্ট্রের বা দেশের কোনো জনগুরুত্বপূর্ণ বা বিরোধপূর্ণ বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে যে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তা জনগণকে অফিশিয়ালি জানানোর ঘোষণাপত্র হলো পরিপত্র বা Circular। পরিপত্র বা সার্কুলার এর কোনও আইনগত ভিত্তি নেই। সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলে নতুন সার্কুলার দেওয়া যায়। প্রকাশিত পরিপত্রের সিদ্ধান্ত নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিলে তখন পরিপত্রটি আবার পরিবর্তন করে নতুন পরিপত্র দেওয়া যায়।
প্রজ্ঞাপন কীঃ
রাষ্ট্রের কোনো জনগুরুত্বপূর্ণ বা বিরোধপূর্ণ বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে যে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সেটি কার্যকর করার প্রমাণপত্র বা দলিল হল প্রজ্ঞাপন। এটি শক্তিশালী আইন গত ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। তবে প্রজ্ঞাপন হয়ে গেলে পরবর্তীতে তার পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা যায় না। আর একবার প্রজ্ঞাপন হয়ে গেলে পরবর্তীতে যা করার আদালত করবে। সেখানে সরকারও কোনো হস্তক্ষেপ করতে পারে না।

অফিস আদেশ কীঃ
অফিস আদেশ হল, নিয়োগকারী বা কর্তৃপক্ষ বা উর্ধতন কর্মকর্তাদের দ্বারা জারি করা আদেশ। অফিস আদেশ এর মাধ্যমে কর্মক্ষেত্রের স্থান পরিবর্তন যথা বদলী, পদোন্নতি, কর্মঘন্টা নির্ধারণ ইত্যাদি হয়ে থাকে।

গেজেট কীঃ
গেজেট হল, সরকারী ঘোষণা সম্বলিত এক ধরণের সংবাদ। রাষ্ট্রপতি যখন কোন অফিসিয়াল দলিল স্বাক্ষর করেন তখন সেই দলিল টিকে বলা হয় প্রজ্ঞাপন বা Notification। বিভিন্ন সরকারি অফিস তাদের প্রজ্ঞাপন, আইন, বিধি, প্রবিধি ইত্যাদি গেজেট হিসাবে অন্তুর্ভূক্তি করার জন্য ঢাকার তেজগাঁওয়ে ‘বাংলাদেশ ফরম ও প্রকাশনা’ অফিসে পাঠায়। উক্ত অফিস বিভিন্ন সরকারি অফিসের পাঠানো প্রজ্ঞাপন, আইন, বিধি, প্রবিধি ইত্যাদি বিজি প্রেস বা বাংলাদেশ সরকারি মুদ্রণালয় থেকে গেজেট আকারে ছাপানোর ব্যবস্থা করে থাকে। ছাপানো গেজেটে মহামান্য রাষ্ট্রপতির কোন স্বহস্তের স্বাক্ষর থাকে না। শুধু মাত্র শেষে লেখা থাকে এমন রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে …….।

পরিশেষে আমার একটা অবজার্ভেশনের কথা বলতে চাই-
সাইকোলজিতে একটা শব্দ আছে, সেটা হলো সাইকোপ্যাথিক। যারা ভেতরে এক রূপ আর বাইরে আরেক রূপ, তারাই মূলত সাইকোপ্যাথিক। এরা প্রকাশ্যে যারা খুন করে, অপরাধ করে তাদের চাইতেও ভয়ংকর। কারণ, এদের সহজে চেনা যায় না। সাধারণ মানুষ চিনতে পারে না। মুখোশ পরে চলে এরা। সাধারণের বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষী হয়ে থাকে। প্রশ্ন হচ্ছে – এরা কারা? উত্তর একটাই এরা ৭১ এর পরাজিত শক্তি ও তাদের দোসর।এরাই এখন বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করতে সোচ্চার হয়ে ওঠেছে।
এরাই এখন সরকারকে বিব্রত করছে।বাংলাদেশের মানুষকে মানুষের মুখোমুখি দাড় করিয়ে প্রত্যক্ষ সন্ত্রাসে লিপ্ত হয়েছে।এরা ধর্মের দোহায় দিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মস্তিষ্ককে ধোলায় করছে।
যেমনটা করেছিল জঙ্গিরা।

আশা করা যায় সরকার এ দেশের সাধারণ মানুষের আশা আকাঙ্খা ও যৌক্তিক দাবিকে অস্বীকার না করে
সহিষ্ণু আচরণ করবেন এবং মানুষের আশা আকাঙ্খাকে যৌক্তিক, যুগোপযোগী, শান্তিপূর্ণ ও সাংবিধানসম্মত ইতিবাচক সমাধানের উদ্যোগ নিবেন।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

ফেসবুক পেজ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭৩০
৩১  
error: protected !!

Copyright© 2025 All reserved