ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫, ৫ বৈশাখ, ১৪৩২, ১৯ শাওয়াল, ১৪৪৬
সর্বশেষ
বিএনপি সমন্বয়কদের উপর হামলা: একে অপরকে দোষারোপ
তিন ডাকাতের নিয়ন্ত্রণে চট্টগ্রাম শহরের চুরি-ডাকাতি, আছে শতাধিক মামলা
মানবতাই শ্রেষ্ঠ, ঈদ পুনর্মিলনী ও সংবর্ধনা:(মাতপ,স) সিলেট
মেহেদীর রং শুকানোর আগেই না ফেরার দেশে ফটিকছড়ির প্রবাসী মঞ্জু
কাঠের ব্রিজ থেকে হালদা নদীতে পড়ে প্রবাসী যুবকের মৃত্যু
নতুন রাজনৈতিক দল’র আত্মপ্রকাশে রফিকুল ও ফাতিমা:মিশ্র প্রতিক্রিয়া জনমনে
চট্টগ্রামে বাসে ১৪ বছরের কিশোরীকে গণধর্ষণ, চালক-হেলপার গ্রেফতার
বন্দর’র সর্বোচ্চ শত কোটি টাকা অর্জনে মেয়র শাহাদাত প্রসংশিত
সীতাকুণ্ড সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রিয় মুখ রাজন আর নেই
উৎসবমুখর পরিবেশে ইপসার বর্ষবরণ উদযাপন

প্রিয় বাবা

তোমার ঠিকানায় এই চিঠি পাঠাতে গিয়ে আমি থমকে গেছি। বারবার চোখটা ঝাপসা হয়ে আসছে। জানি, এই চিঠি তোমার হাতে পৌঁছাবে না, তবু আমার হৃদয়ের প্রতিটি কথা লিখতে চাই।
তুমি নেই—এ কথা এখনো বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। মনে হয়, তুমি হয়তো কোথাও আছো, কোনোদিন হঠাৎ ফিরে এসে বলবে, “কেমন আছিস রে?” কিন্তু জানি, সেই দিন আর আসবে না।
জানো বাবা, ছোট ছোট হাতে তোমার আঙ্গুল ধরে মসজিদে যাওয়া, স্কুল থেকে ফিরে তোমার কোলে ঝাঁপিয়ে পড়া—এসব স্মৃতি আজও আমার কাছে জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ। নতুন জামার বায়না ধরতাম, আর তুমি মিষ্টি হেসে বলতে, “চিন্তা করিস না, সব হবে।” তোমার সেই হাসি, তোমার স্নেহমাখা চোখ, সবকিছু যেন আমার হৃদয়ের গভীরে অমর হয়ে আছে। আর কোনো বাবুকে আদর করলে যে আমার কত হিংসে হতো, তা এখনো মনে পড়লে হাসি পায়। তবে সেই হাসির আড়ালেও চোখ ভিজে ওঠে, কারণ তুমি আর নেই।
সেদিনের কথা আজও আমার স্মৃতিতে দগদগে হয়ে আছে। আমি স্কুল থেকে বাসায় ফিরলাম, মা আমাকে কোনো কিছু না বলেই হাসপাতালে নিয়ে গেল। আমি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না, শুধু দেখলাম, তুমি আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলে। তোমার সেই শক্ত আলিঙ্গন আজও আমি শরীরে অনুভব করি। তারপরই ধীরে ধীরে তোমার শরীর নিস্তেজ হয়ে গেল। আমি তখন ছোট, কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। কিন্তু সেই মুহূর্তে আমার ভেতরে যেন এক বিশাল শূন্যতা সৃষ্টি হলো। চারদিকে কান্নার রোল। আমি নির্বাক হয়ে তোমার শান্ত চোখ দুটো দেখছিলাম।
তুমি চলে যাওয়ার পর মা কত একা হয়ে গেছে। তোমার পুরোনো জামা, হাতে লেখা পান্ডুলিপি—এসব জড়িয়ে ধরে মা এখনও কাঁদে। তোমার টেবিল, তোমার খাট—এগুলোতে মা তোমার স্পর্শ খুঁজে বেড়ায়। জানো, বাবা, মায়ের সেই কষ্ট দেখলে আমি আরও বেশি ভেঙে পড়ি।
তোমার অভাব আমাদের জীবনে কখনোই পূরণ হবে না। তোমার স্মৃতিগুলো যেন আমাকে প্রতিদিন নতুন করে তাড়িয়ে বেড়ায়। তোমার হাত ধরে হাঁটার সেই নির্ভরতা, তোমার মুখের হাসি, তোমার স্নেহময় চোখ—এসব আজ আমার জীবনের সবচেয়ে বড় শূন্যতা।
তুমি কি আমাদের দেখতে পাও, বাবা? তুমি কি জানো, আমরা তোমাকে কতটা মিস করি? যদি পারতাম, একবার তোমার গলা জড়িয়ে ধরে বলতাম, বাবা, আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি, তোমাকে অনেক মিস করছি, বাবা। জানি, তুমি আমাদের ওপর আশীর্বাদের ছায়া হয়ে আছো। তোমার সেই আশীর্বাদেই আমরা বেঁচে আছি। তুমি যেখানেই থাকো, ভালো থেকো। আমি প্রতিদিন তোমার জন্য প্রার্থনা করি।

 

তোমার আদরের, আঁখি মনি।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

ফেসবুক পেজ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০  
error: protected !!

Copyright© 2025 All reserved