পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ৩১তম সভা পরস্পরকে দোষারোপের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। সোমবার, ২৬ মে, চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত এই সভায় বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা একে অপরকে পাহাড় ব্যবস্থাপনায় গাফিলতির জন্য দায়ী করেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় কমিশনার মো. জিয়াউদ্দীন। উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সোহেল রানা, নগর পুলিশের উপকমিশনার মো. রইছ উদ্দিন, চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল করিম, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) সচিব রবীন্দ্র চাকমা এবং বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এ কে এম জসিম উদ্দীন।
সভায় রেলওয়ের ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা মাহবুবুল করিম অভিযোগ করেন, মতিঝরনা এলাকায় রেলওয়ে ও ওয়াসার ১৮ একর পাহাড়ি ভূমি রয়েছে। সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ওয়াসার পানির সংযোগও রয়েছে। তিনি বলেন, এসব এলাকায় কেউ কেউ ওয়াসার সংযোগ ব্যবহার করে পানির ব্যবসা করছে।
ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, রেলওয়ের জায়গায় যদি রেল কর্তৃপক্ষ অবৈধ দখল ঠেকাতে না পারে, তবে ওয়াসা কীভাবে পানির সংযোগ নিয়ন্ত্রণ করবে? তিনি দাবি করেন, এসব এলাকায় ওয়াসা কোনো বৈধ সংযোগ দেয়নি।
সভায় বিভিন্ন পক্ষ বিদ্যুৎ বিভাগের অবৈধ সংযোগ নিয়েও অভিযোগ তোলে। এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের প্রকৌশলী জসিম উদ্দীন বলেন, অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার অভিযান নিয়মিত পরিচালনা করা হচ্ছে।
সভায় অবৈধ সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত পুনর্ব্যক্ত করা হয়। তবে আগে নেওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না হওয়ার অভিযোগও ওঠে।
রেলওয়ের কর্মকর্তা মাহবুবুল করিম অভিযোগ করেন, ফয়সলেক এলাকার রেলওয়ের পাহাড়ে অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের সুবিধার্থে বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এবং সিটি করপোরেশন সড়ক নির্মাণসহ নানা সুবিধা দিচ্ছে। জবাবে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, এমন কাজ থেকে তারা বিরত থাকবেন।
সভায় সিডিএর বিরুদ্ধে পাহাড়ি ভূমিতে নকশা অনুমোদনের অভিযোগ তোলা হয়। সিডিএ সচিব রবীন্দ্র চাকমা বলেন, যথাযথ কাগজপত্র যাচাই করেই নকশা অনুমোদন দেওয়া হয়। কোনো খতিয়ানে পাহাড়ি টিলা থাকলে সেখানে নকশা অনুমোদন দেওয়া হয় না।
সভাপতির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার মো. জিয়াউদ্দীন বলেন, ‘আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি, আমাদের চেয়ে অপরাধী চক্র বেশি সক্রিয়। কেউ না কেউ তাদের সহায়তা করছে। পরিবেশ অধিদপ্তর, ম্যাজিস্ট্রেটসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কর্মকর্তাদের প্রতিদিন পাহারা দিতে হচ্ছে কখন কোথায় পাহাড় কাটছে। আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে।’