চট্টগ্রামে শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে কর্মরত বিভিন্ন সংস্থার উদ্যোগে শিশু গৃহকর্মী রহিমার ধর্ষণ মামলাসহ সব শিশু ও নারী নির্যাতন মামলার ন্যায়বিচারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২৬ মে) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে বক্তারা গৃহকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত, শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
মানববন্ধনে উল্লেখ করা হয়, ‘সরকারি শিশু সহায়তা হটলাইন ১০৯৮-এ ফোন করে রহিমা নামের এক শিশু গৃহকর্মী তার উপর ঘটে যাওয়া যৌন নির্যাতনের বিষয়ে অভিযোগ জানায়। অভিযোগের ভিত্তিতে সমাজসেবা অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলা অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা তাকে তালাবদ্ধ ঘর থেকে উদ্ধার করে এবং সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দায়ের করেন।’
মানববন্ধনে অপরাজেয় বাংলাদেশের প্রতিনিধি জিনাত আরা বেগম বলেন, “রহিমা দিনের পর দিন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। টেলিভিশনে ১০৯৮ হটলাইনের তথ্য দেখে সাহস করে ফোন করে সে নিজেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এ ঘটনা প্রমাণ করে- আমাদের অগোচরে এ ধরনের নির্যাতন প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে। রহিমার মতো শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে আইনি কাঠামো ও জনসচেতনতা উভয়ই জরুরি।”
ইপসার প্রতিনিধি মোহাম্মদ আলী শাহিন বলেন, “শিশু গৃহকর্মীদের উপর নির্যাতনের ঘটনা আমাদের সমাজে প্রতিনিয়ত ঘটছে। রহিমার মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানই পারে এমন ঘটনা রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে।”
অপরাজেয় বাংলাদেশের বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহবুবুল আলম বলেন, “এই মামলা যদি দীর্ঘসূত্রতায় পড়ে, তবে তা সমাজে একটি ভয়াবহ বার্তা দেবে। ১০৯৮-এ পাওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ের করা মামলাটি দ্রুত বিচার ও শাস্তির মাধ্যমে নিষ্পত্তি হওয়া জরুরি।”
ঘাসফুলের প্রতিনিধি মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, “রহিমার মত আর কোন গৃহকর্মী যেন এভাবে নির্যাতনের শিকার না হয়। তাদের সুরক্ষায় পৃথক আইন প্রণয়ন এবং প্রচলিত আইনের যথাযথ প্রয়োগ এখন সময়ের দাবি। শিশুদের সুরক্ষায় আমাদের সক্রিয় ও মানবিক হতে হবে।”
সংশপ্তকের প্রতিনিধি সূচিত্রা মিত্র বলেন, ‘আজকের এই মানববন্ধন ধর্ষণ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ার প্রতীক। রহিমার ধর্ষকের দ্রুত বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।”
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী অন্য বক্তারাও বলেন, ‘রহিমার মত শিশুদের উপর যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের নির্যাতন না হয়, সেজন্য প্রয়োজন আইনের কার্যকর প্রয়োগ এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্রিয় অংশগ্রহণ।’
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন উন্নয়ন কর্মী আব্দুস সবুর, মো. রুহুল মহির (মমতা), স্বপ্নীল চাইল্ড ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক আতাউল হাকিম আরিফ, শ্যামশ্রী দাস (উন্নয়ন কর্মী), নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় কর্মরত নেত্রি ফারহানা ইদ্রিস, সানজিদা আক্তার।
সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়, রহিমার মামলার দ্রুত বিচার এবং শিশু গৃহকর্মীদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা বৃহত্তর সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলবে।